Total Pageviews

Wednesday, July 13, 2011

গরমে ঘাম ও তার প্রতিকার


আমরা ঘামি কেন?
কিডনি আমাদের শরীরে ছাঁকনির কাজ করে-এ কথা সবারই জানা। শরীরের যাবতীয় দূষিত পদার্থ কিডনির ছাঁকনিতে ছেঁকে নিয়ে বাইরে বের করে দেয়া হয়। ভাবছেন, ঘামের সঙ্গে কিডনির সম্পর্ক কী! নিকট একটা সম্পর্ক তো আছেই। কেননা ঘামের সঙ্গে শরীরের অনেক অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাইরে বেরিয়ে আসে। তাই বোধহয় প্রাচীন যুগে কিডনি বিকল হলে ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা না থাকায়, রোগীকে গোটা কতক কম্বল চাপা দিয়ে রাখা হতো। এর ফলে কিডনি ফেইলিওর রোগীর শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হতো। শরীরের কিছুটা বর্জ্য পদার্থ ঘামের সাহায্যে বেরিয়ে যাওয়ায় রোগী কিছুটা সুস'বোধ করত। তাই এ কথা বলাই বাহুল্য, শরীর সুস্থ রাখতে এবং শরীরের মধ্যে থাকা অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দিতে ঘাম অপরিহার্য। সুতরাং ঘাম কম করার জন্য অযথা মাথা ঘামিয়ে সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করে না তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঘাম দুই রকম
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও ডাক্তারি মতে ঘাম প্রধানত দুই ধরনের। (১) এক্রিন ঘাম (eccrine) এবং (২) অ্যাপোক্রিন ঘাম (apocrine)।
এক্রিন ঘাম
কায়িক পরিশ্রমে অথবা বাইরের তাপমাত্রার প্রভাবে শরীরের তাপ কিছুটা বেড়ে যায়। তখন আমাদের শরীরের সিস্টেম চায় তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে। ঠিক তখনই এক্রিন গ্রন্থি সক্রিয় হয়ে ঘাম নিঃসরণ করে। সাধারণ এই ঘামই ডাক্তারি মতে এক্রিন ঘাম। যা বাষ্প হয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে দুই থেকে চার মিলিয়ন এক্রিন ঘামের গ্রনি' থাকে। গরমের সময় সারা শরীর থেকে বেশ কয়েক লিটার ঘাম বেরিয়ে যায়। ঘর্মগ্রনি' থেকে ঘাম নিঃসরণের সম্পূর্ণ ব্যাপারটা নির্ভর করে নার্ভের কন্ট্রোলের ওপর।
বেশি তাপ এবং অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম ছাড়াও ইমোশনাল কারণে ঘাম নিঃসরণ বাড়ে। তবে এ সময়ে হাত-পায়ের তালু আর বগলই বেশি ঘামে। হার্ট অ্যাটাকের সময়েও ঘামের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
অ্যাপোক্রিন ঘাম
অ্যাপোক্রিন ঘামের গ্রন্থি থাকে বগলে এবং যৌনাঙ্গের চারপাশে। এক একজন মানুষের গায়ে একেক রকম গন্ধ সৃষ্টি করে এই অ্যাপোক্রিন ঘাম। তবে অ্যাপোক্রিন ঘামের গ্রন্থিগুলো শৈশবে নিষ্ক্রিয় থাকে। বয়ঃসন্ধির পর থেকে এ ধরনের ঘাম নিঃসরণ শুরু হয়। প্রসঙ্গত, অ্যাপোক্রিন গ্লান্ডের পাশাপাশি এক্রিন ঘামের গ্রন্থিও থাকে। যদিও মানুষে মানুষে আলাদা গন্ধ সৃষ্টির জন্য অ্যাপোক্রিন ঘাম দায়ী, কিন' এই ঘাম যখন প্রথম ত্বকের ওপর বেরোয় তখন তার কোনো দুর্গন্ধ থাকে না। কিন' ত্বকের ওপর থাকা জীবাণুরা যুদ্ধ শুরু করে দেয় ঘামের সঙ্গে। আর এর ফলেই যত গন্ধের উৎপত্তি।
কেন ঘাম বেশি হয়
  • ঘাম বেশি না কম হবে তা কিছুটা নির্ভর করে বংশগতির ওপর।
  • কিছুটা পরিবেশের ওপর।
  • অনেকটাই শারীরিক পরিশ্রমের ওপর এবং
  • মানসিক অবস্থা অর্থাৎ উৎকণ্ঠা, টেনশন আছে, না মানসিক ধৈর্যের অধিকারী তার ওপর। উদাহরণ হিসেবে ক্রিকেট খেলার কথা ভাবা যায়। যেমন-
  • মাঠে অত্যন্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে প্লেয়ারদের। তাই তারা প্রচণ্ড ঘামছেন।
  • তাদেরই সহ-খেলোয়াড় ব্যাট হাতে প্যাড পায়ে তৈরি। উত্তেজনায় কপালে স্বেদবিন্দু।
  • অন্যদিকে বাড়িতে টেলিভিশনের পর্দায় যারা খেলা দেখছেন তারাও উত্তেজিত। বলাই বাহুল্য এরাও ঘামছেন, তবে পরিমাণে কম।
  • তবে কম-বেশি যাই হোক না কেন, ঘাম সবারই হয়।
আরবে ঘাম হয় না কেন
এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ঘাম হয় ঠিকই, কিন' তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি বলে সঙ্গে সঙ্গে তা শুকিয়ে যায়। ঘাম হয়েছে বোঝার আগেই ঘাম উধাও। এই কাণ্ডই চলে চক্রাকারে। বাংলাদেশের বাতাসের আর্দ্রতা ঘামকে সহজে শুকাতে দেয় না। ঘামে জবজবে হয়ে থাকতে হয়। এটা কিন্তু একপক্ষে ভালো। কেননা বেশি ঘাম হয় বলেই গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম থাকে। কিন্তু আরবে ঘাম কম হওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে যে কোনো সময়। আর তার অবশ্যম্ভাবী ফল হিট স্ট্রোক।
শরীরে বিকট গন্ধ
জুতো মোজা খোলা মানেই বাড়ি ভরে যাবে দুর্গন্ধে। গায়ের দুর্গন্ধে পাশে বসা বা দাঁড়ানো দায়। সাবান, ডিওডোরেন্ট, পাউডার কোনো কিছুতেই কাজ হয় না। এই সমস্যার পাকাপাকি সমাধান পেতে হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কিছু অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ক্রিম ত্বকের ভাঁজে, পায়ের আঙুলের খাঁজে দিনে একবার করে টানা সাতদিন- এভাবে চার মাস লাগাতে হবে। তার সঙ্গে সুতির হাল্কা ঢিলা জামাকাপড় পরতে হবে। তবে মোজাও সুতির হওয়া চাই। মাঝেমধ্যে কাজের অবসরে মোজা খুলে শুকনো নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে পায়ের আঙুলের ভাঁজ মুছে নিতে হবে। বগলও মুছে শুকনো রাখতে হবে।
অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড, অ্যাবসলিউট অ্যালকোহল দ্রবীভূত করে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। গরমকালে দিনে দুই- তিনবার গোসল করতে পারলে ভালো হয়। পায়ে বেশি রকমের দুর্গন্ধ হলে সুতির তোয়ালে মোজা পরবেন। প্রতিদিন মোজা বদলে নেবেন। জুতার ভেতর শুকনো রাখতে জুতা রোদে দেবেন।
ঘাম না হলে মৃত্যু হতে পারে
প্রচণ্ড গরমে কোনো কারণে ঘাম বন্ধ হয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হতে পারে এবং ঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক সময় এক বিশেষ জন্মগত ত্রুটির জন্য এক্রিন এবং অ্যাপোক্রিন গ্ল্যান্ড অর্থাৎ ঘর্মগ্রনি'র যথাযথ বিকাশ হয় না। বলাই বাহুল্য, এদের ঘাম হয় না। ডাক্তারি পরিভাষায় এ রোগের নাম এক্রোডারমাল ডিসপ্লেশিয়া। এই এক্রোডারমাল ডিসপ্লেশিয়া দুরকম-
(১) অ্যানহাইড্রোটিকঃ এদের একেবারেই ঘাম হয় না, তাই জন্ম মুহূর্ত থেকে রোগ নির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গেই এদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় রাখা জরুরি। না হলে শরীরের তাপমাত্রা সাংঘাতিক রকমের বেড়ে বা কমে গিয়ে মৃত্যু হতে পারে যে কোনো সময়। আসল কথা হলো এতই সাবধানতা মেনে চলা এক প্রকার অসম্ভব বলে এই অ্যানহাইড্রোটিক শিশুদের বাঁচিয়ে রাখা মুশকিল বিশেষত উষ্ণ আবহাওয়ায়।
(২) হাইড্রোটিকঃ এ ধরনের এক্রোডারমাল ডিসপ্লেশিয়ার রোগীদের ঘাম হয় তবে তা অত্যন- অল্প। তাই এদেরও শরীরের তাপমাত্রার হেরফের হতে পারে যখন-তখন। অবশ্য কিছুটা সাবধানতা মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে খুব একটা অসুবিধা হয় না।
চর্মরোগে ঘাম বন্ধ হতে পারে
ত্বকের কিছু অসুখ যেমন- সোরিয়াসিস, একজিমা, ড্রাগ র‌্যাশ জাতীয় Exfoliate dermatitis যদি সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তখন ঘাম বেরুনোর পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এর ফলে রোগীর শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। সে জন্য এ ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা করা উচিত।
ঘাম ও ঘামাচি
ঘামের সঙ্গে ঘামাচির একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। যাদের বেশি ঘাম হয় এবং যারা যথাযথ পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করেন না এবং উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ থাকতে হয় তাদের একসঙ্গে বেশি ঘাম বেরোতে গিয়ে ঘামাচি হয়। ত্বকের ওপরে থাকা জীবাণু, ধুলো-ময়লা এবং অতিরিক্ত পাউডার বা অন্য প্রসাধনের প্রলেপে ঘাম বেরুনোর পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘামাচি দেখা দেয়।
ঘামাচির প্রকারভেদ
  • ছোট সাদাটে শিশির বিন্দুর মতো ঘামাচির ডাক্তারি নাম মিলোরিয়া ক্রিস্টালিনা। সাধারণত প্রচণ্ড জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ঘাম নিঃসরণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আর তার ফলেই এ ধরনের ঘামাচি বেরোয়।
  • সাধারণ ঘামাচি মিলেরিয়া রুবরা হওয়ার মূল কারণ একই- ঘাম বেরুনোর পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়া, গরমের সময় অতিরিক্ত রোদ, বদ্ধ গরম পরিবেশে বা ভ্যাপসা ঘরে থাকলে, সিন্থেটিক বা মোটা টাইট পোশাক পরলে, অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে এই ঘামাচির প্রবণতা বাড়ে।
  • অনেকের বাড়াবাড়ি রকমের খুব বড় বড় প্রায় ফোড়ার মতো আকারের লালচে ঘামাচি দেখা যায় যা বেশ কষ্টদায়ক। এই ধরনের ঘামাচির ডাক্তারি নাম মিলেরিয়া প্রোফান্ডা।
কী করবেন
  • ঘামাচি নাশক ট্যালকম পাউডার পুরু করে লাগালে ঘামাচি কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা বাড়তি পাউডার ঘুম নিঃসরণের পথ বন্ধ করে দেয় ফলে ঘাম আর জীবাণু মিলেমিশে ঘামাচি কমানোর বদলে বাড়িয়ে তোলে।
  • ঘাম বেশি হলে তা যেন ত্বকের ওপর জমে না থাকে। নরম রুমাল বা তোয়ালে দিয়ে মুছতে হবে বারবার।
  • দিনে দুই-তিনবার গোসল করা দরকার।
  • শরীরে বিভিন্ন ভাঁজে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল লোশন লাগালে ঘামাচির হাত থেকে রেহাই মেলে।
  • অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডারে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • স্নানের পর হালকা করে ট্যালকম পাউডার লাগান।
  • ঠাণ্ডা ঘরে থাকার চেষ্টা করুন, ঘামাচি সেরে যাবে।
  • ঘামাচি খুঁটবেন না, সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বাড়াবাড়ি রকমের ঘামাচি হলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করতে হবে।
ঘাম এবং অ্যালার্জি
ঘামের জন্য কিছু কিছু অ্যালার্জি এবং কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের প্রবণতা বেড়ে যায়। শীতকালে কোনো ইমিটেশন জুয়েলারি পরা যায় অনায়াসে। কিন' গরমে এ ধরনের মেটিরিয়াল ঘামের সঙ্গে ত্বকের মধ্যে প্রবেশ করে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে অনেকের ক্ষেত্রে। কিছুদিন এসব জুয়েলারি পরা বন্ধ রাখতে হয়। তা না হলে ত্বকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
কুষ্ঠ ও ঘাম
ঘাম হওয়ার ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণ করে এক বিশেষ ধরনের নার্ভ। কুষ্ঠরোগে নার্ভ রুট আক্রান্ত হয় বলে কুষ্ঠ আক্রান্ত স্থানে ঘাম হয় না। কিন' শরীরের অন্যান্য অংশে ঘামের পরিমাণ খুব বেড়ে যায়। তাই শরীরের কিছু অংশ ঘামমুক্ত এবং অন্য অংশে প্রচুর ঘাম এ রকম ক্ষেত্রে সোয়েট টেস্ট করে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস, ঘাম এবং দুর্গন্ধ
অ্যাপোক্রিন ঘাম মানুষের শরীরে গন্ধ সৃষ্টি করে। বাহুমূল ও যৌনাঙ্গে এই অ্যাপোক্রিন ঘামের উৎপত্তি। বংশগত কারণে এবং কখনো যথাযথ পরিচ্ছন্নতার অভাবে কারও কারও শরীরে অত্যন্ত বাজে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এটি দূর করতে একাধিকবার গোসল ও প্রয়োজনীয় অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল লোশন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া সুগন্ধি, ডিওডোরেন্ট ও পারফিউম লাগানো যেতে পারে। ট্রাইক্লোসামযুক্ত সাবান ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়।
খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে গায়ের গন্ধের একটা সম্পর্ক আছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত রসুন এবং মাংস খেলে সেই সাথে হজম ক্ষমতা যথাযথ না হলে ঘামে প্রচুর দুর্গন্ধ হয়। প্রতিকার হিসেবে জেন্টামাইসিন, ওসিসোমাইসিন জাতীয় লোশন দিনে দুবার লাগাতে হয়।
অসুবিধা
পরিবেশগত কারণে, কখনো বংশগত কারণে অনেক মানুষেরই অতিরিক্ত ঘাম হয়। ঘাম জমে নানা ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে, আঙুলের ফাঁকে, কুঁচকি ও বাহুমূলে দাদ, ছুলি ইত্যাদি ফাঙ্গাল ইনফেকশনের প্রবণতা বাড়ে। এছাড়া ফোড়া ও কার্বঙ্কলের প্রকোপও বাড়ে। প্রতিকার হিসেবে বারেবারে ঘাম মুছে ফেলতে হবে। তবে বেশি জোরে রগড়ে বা ঘষে মুছবেন না। এতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ঢিলেঢালা পাতলা ও হাল্কা সুতির পোশাক পরতে হবে। এছাড়া অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ক্রিম, যেমন মিউপোরোসিন, সোডিয়াম ফিউসেডেট নাকের ফুটোয়, ত্বকের ভাঁজে লাগাতে হবে।
হাত-পায়ের ঘাম কমাতে বোটক্স ইনজেকশন
অনেকের হাত-পা ঘামার প্রবণতা আছে। কোনো কোনো মানুষের হাত-পা ঘামা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে টাইপ করা, লেখালেখি করা, কম্পিউটার চালানো অথবা চটি জুতা পরে হাঁটা মুশকিল হয়ে ওঠে। এ সমস্যার ডাক্তারি নাম হাইপারহাইড্রোসিস। এর প্রতিকার হিসেবে অ্যাবসলিউট অ্যালকোহল অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড দ্রবীভূত করে বারে বারে লাগানো হয়। এছাড়া আয়ানটোফোরোসিস অর্থাৎ কলের পানির আয়ন ইলেকট্রোলিসিসের সাহায্যে বিশ্লেষিত করা হয়। এই পানিতে হাত-পা ডুবিয়ে রাখা হয়।
বোটুনিয়াম টক্সিন বা বোটক্স ইঞ্জেকশন দিয়েও হাত-পায়ের ঘাম কমানো যায়। তবে তিন-চার মাস পরপর ইঞ্জেকশন নিতে হয়। স্থায়ী মুক্তি সম্ভব নয়। দুটি পদ্ধতিই বেশ খরচসাপেক্ষ।
ঘামের জন্য ওষুধ খাবেন না
মানুষ উষ্ণ রক্তের প্রাণী। চারপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা একই থাকে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস শরীরের এই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কাজটা করে। ঘাম বেশি মানে শরীরের কোনো সমস্যা হতে পারে। অবশ্য অতিরিক্ত পরিশ্রমেও বেশি ঘাম হয়। কারণ অনুসন্ধান না করে ঘাম কমানোর ওষুধ খেলে টেম্পারেচার প্রোটেকটিভ মেকানিজমটা নষ্ট হয়ে যায়। তাই কোনো মানুষ যদি হঠাৎ বেশি ঘামতে শুরু করে দেখতে হবে পেছনে কী কারণ আছে, যে কোনো বিপজ্জনক ব্যথা যেমন কিডনির ব্যথা, হার্টের ব্যথা, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস থেকে ফুসফুসের অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট, অ্যাংজাইটি, স্নায়বিক চাপ ইত্যাদি। শুষ্ক গরমের দেশে ঘাম হয়ে সঙ্গে সঙ্গে উবে যায় বলে মনে হয় ও দেশে ঘাম হয় না। তবে আমাদের আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে প্যাচপ্যাচে ঘাম আপাতদৃষ্টিতে কষ্টকর ও বিরক্তিকর হলেও আমরা অনেক বেশি নিরাপদ। কেননা শুকনো গরমে চট করে ডিহাইড্রেশন ও হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বয়স্ক মানুষ হঠাৎ প্রচণ্ড ঘামতে শুরু করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে শুইয়ে দেবেন, লবণ লেবু চিনির শরবত খাওয়াবেন। প্রয়োজন হলে ডাক্তার দেখাবেন। শীতের দেশের মানুষ গরমের দেশে এসে হঠাৎ ঘামতে ঘামতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন মূলত সোডিয়ামের অভাবে। এ ক্ষেত্রেও লবণ-চিনির শরবত দিতে হবে।
টেনশনে ঘাম বাড়ে
ইদানীং বেশির ভাগ সায়কিয়াট্রিস্ট রোগীর সঙ্গে প্রথম পরিচয়ে করমর্দন করেন। এর পেছনে উদ্দেশ্য হলো দেখা যে, রোগীর হাত শুকনো না ঘামে ভেজা! কেননা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক বেশি ঘামের পেছনে লুকিয়ে থাকে মনের নানা অসুবিধা। ভয় বা প্যানিক ডিসঅর্ডার, রাগ, উত্তেজনা, উদ্বেগজনিত অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, এক্সামিনেশন ফোবিয়া ইত্যাদি অতিরিক্ত ঘামের কারণ। আরও দেখা গেছে, টাইপ ‘এ’ পার্সোনালিটির মানুষ যারা অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী, সব সময় কেরিয়ার বা অন্য লক্ষ্যের পেছনে ছুটে চলেছেন তাদেরও ঘাম বেশি হয় অন্যদের তুলনায়। বিশেষ করে যদি হাইপারহাইড্রোসিস অর্থাৎ হাত-পা ঘামার সঙ্গে সঙ্গে হাত অল্প অল্প কাঁপে তা হলে অ্যাংজাইটির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বা কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কিছুদিন আগে থেকে কিছু কিছু পরীক্ষার্থীর সাংঘাতিক পরিমাণে হাত-পা ঘামতে শুরু করে। অনেকের এমন ঘাম হয় যে কলমে রুমাল বা তোয়ালে জড়িয়ে লিখতে হয়। কোনো ওষুধ নয়, শুধু দুই একটা সিটিংয়ে কাউন্সিলিং, সাইকোথেরাপি আর রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আসলে অ্যাংজাইটি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাসলগুলো টেনসড হয়ে য়ায়। ফলে ঘাম আরও বেড়ে যায়। রিলাক্সেশন করলে শরীরের পেশির সঙ্গে সঙ্গে মনটাও হাল্কা হয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিছুটা কমে। ফলে ঘামও কম হয়। অবশ্য শুধু উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ নয়, রাগ থেকেও হঠাৎ ঘাম হতে পারে। আর রক্তচাপও বেড়ে যেতে পারে হঠাৎ করে। তাই কাজের চাপের মধ্যে কোনো কারণে খুব রাগ হলে চেঁচামেচি না করে ওই অবস্থাতেই চার-পাঁচবার ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ করে নিন। একদিকে উত্তেজনা ও রাগ কিছুটা প্রশমিত হবে এবং অতিরিক্ত ঘেমে গিয়ে শরীরের এনার্জিও নষ্ট হবে না। ভয় পেলেও ঘামের ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায় শরীর বেয়ে। এ প্রসঙ্গে বলি, ঘাম কখনো ঠাণ্ডা হয় না। প্রচণ্ড ভয় পেলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পায় তাই ঘাম ঠাণ্ডা মনে হয়। যে কারণেই ঘাম হোক না কেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, শরবত পান করা জরুরি।
ঘাম কমাতে শল্য চিকিৎসা
ঘাম কমাতে অপারেশন? ভাবছেন খুব বাড়াবাড়ি? আদৌ তা নয়। যারা ভুক্তভোগী তারাই একমাত্র হাড়ে হাড়ে টের পান কুলকুল করে হাতের তালু, পায়ের তলা, বাহুমূল ঘামার কী ভয়ানক জ্বালা। কোনো কাজই করা যায় না শানি-তে, স্বাভাবিকভাবে। তারা যে কোনো মূল্যে অসহ্য ঘাম কমাতে আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো, কমবেশি প্রায় সব দেশের (গরম আবহাওয়ার) এক শতাংশ মানুষ হাইপারহাইড্রোসিসের মতো অতিরিক্ত ঘামের সমস্যায় ভোগেন। এদের প্রায় ২৫ শতাংশেরই বংশগত কারণে এ রোগ হয়। বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। এদের মধ্যে হাত ঘামার সমস্যায় কষ্ট পান ২৬ শতাংশ, বাহুমূল ৩৭ শতাংশ এবং দুই জায়গাতেই অতিরিক্ত ঘাম হয় ৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে।
এতজন মানুষের অতিরিক্ত হাত-পা ঘামার সমস্যার সমাধানের কিছু সাময়িক ব্যবস্থা আছে। যেমন- ফরমালিন দিয়ে ঘন ঘন হাত ও পায়ের তালু মুছে শুকনো করে দেয়া হয়। কিন্তু সারা দিনে ২-৩ বারের বেশি এ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। তাই ইদানীং Thoracoscopic Splanchnicectomy অপারেশনই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বুকের পাশে পাঁজরের পেছন দিক থেকে ছোট তিনটে কি হোল করে নার্ভ কেটে দেয়া হয় যাতে ভবিষ্যতে প্রচণ্ড ঘামের সমস্যায় ভুগতে না হয়।
হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস রোগে ঘাম বেশি হয়
মোটা মানুষ বেশি ঘামে এ কথা সবারই জানা। আসলে ওজনের বোঝা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে BMR অর্থাৎ বেসাল মেটাবলিক রেট বাড়ে। আর এই বেশি BMR-ই বাড়তি ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ। হাই ব্লাডপ্রেসার ও করোনারি আর্টারি ডিজিজের এক অন্যতম উপসর্গ দরদরিয়ে ঘাম। বুকে ব্যথা নেই কিন' একটা চাপ ধরা ভাব, সঙ্গে নিঃশ্বাসের কষ্ট, আর অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি গলগল করা ঘাম-হার্টের অসুখের পূর্বাভাস হতে পারে। বুকে ব্যথার সঙ্গে প্রচণ্ড বেশি ঘাম হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। এ ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হার্টের চিকিৎসার সুবিধাযুক্ত হাসপাতালে যাওয়া উচিত। হার্টের আর একটি অসুখ লেফট ভেন্ট্রিকিউলার ফেইলিওর হলে ফুসফুসে পানি জমতে পারে। কার্ডিমায়োপ্যাথি নামে এই অসুখে সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠতে গেলে ঘেমে জামাকাপড় ভিজে যায়। এটাও খুব অ্যালার্মিং সিচুয়েশন।
ব্লাড সুগার বা ডায়াবেটিসের রোগীদেরও ঘাম সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। বিশেষত যারা ইনসুলিননির্ভর। কেননা হঠাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গেলে অর্থাৎ হাইপোগ্লাইসিমিয়া হলে গলা শুকিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড ঘাম হয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা জরুরি। এ রকম হলে সঙ্গে সঙ্গে গ্লুকোজ বা চিনি মেশানো পানি, নিদেনপক্ষে একটা লজেন্স খেতে হবে।
এছাড়া ভেসোভেগাল অ্যাটাক হওয়ার আগ মুহূর্তে দরদর করে ঘাম হয়। ভেসোভেগাল হলো এমনই একটা সমস্যা যা হঠাৎ করে হতে পারে যে কোনো মানুষেরই। হঠাৎ চারপাশ ঝাপসা হয়ে ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে মানুষটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। শতকরা বিশ জন মানুষের জীবনে অন-ত একবার ভেসোভেগালের অ্যাটাক হয়। অবশ্য অনেকের সাত-আটবার পর্যন্ত ভেসোভেগালের অ্যাটাক হয়। এদের বলে ম্যালিগন্যান্ট ভেসোভেগাল। কোথাও কিছু নেই হঠাৎ দরদর করে ঘাম ভেসোভেগালের পূর্বাভাস হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়তে হবে। এছাড়া কুশিং সিনড্রোম বা থাইরো টক্সিকোসিস জাতীয় হরমোনের অসুখে BMR বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড বেশি ঘাম হয়। কোনো কারণ ছাড়াই প্রচণ্ড ঘাম আর স্বাভাবিকের থেকে বেশি হার্টরেট থাকলে কোনো শক বা ইন্টারনাল হ্যামারেজের আশঙ্কা করা হয়। সুতরাং হঠাৎ বেশি ঘামতে শুরু করলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কী খাবেন?
বেশি ঘাম হলে অনেকেই বেশি করে পানি পান করেন। কিন্তু শুধু পানি নয়, লবণ, চিনি ও পাতিলেবু মিশিয়ে শরবত করে খেলে ভালো হয়। কেননা ঘামের সঙ্গে কিছু দূষিত পদার্থ ও তার সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সোডিয়াম ও যৎসামান্য পটাশিয়াম ও বাইকার্বোনেট বেরিয়ে যায়। সোডিয়াম বাইকার্বোনেট ইত্যাদির তারতম্যের জন্য শরীর অত্যন্ত দুর্বল ও অসি'র লাগে। এসব প্রতিরোধ করতে যথাযথ ডায়েটের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ঘাম হলে পানির তেষ্টা পায়, তাই বেশির ভাগ মানুষই প্রচুর পরিমাণে পানি খান। কিন্তু আমরা বলি বেশি করে শরবত খেতে। বেশি ঘাম হলে যা খেতে হবে-
  • সোডিয়ামের ঘাটতি ঠেকাতে সাধারণ লবণই যথেষ্ট, তাই পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিন। চিনি লবণের অ্যাবজারবেশনের সাহায্য করে। তাই লবণের সঙ্গে অল্প চিনি মিশিয়ে নিতে পারেন। এ সময়ে লবণ, চিনি ও পাতিলেবুর শরবত খেলে ভালো লাগে। শরীরও সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে না। তবে মনে রাখা উচিত ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগীর লবণ-চিনি খাওয়া মানা।
  • গরমে দইয়ের ঘোল ও ডাব খেতে পারেন। প্রথমত ঘোল ভালো লাগে, দ্বিতীয়ত দইয়ে থাকা র‌্যাকটিক এসিড চটজলদি হজম করাতে সাহায্য করে। ডাবে থাকা পটাশিয়ামও শরীর তরতাজা রাখতে পারে।
  • কাঁচা আমপোড়ার শরবতও শরীর ঠাণ্ডা রাখে।
  • বয়স্ক মানুষদের ঘাম বেশি হলে অবিলম্বে লবণ লেবুর শরবত খাওয়ানো দরকার, না হলে হঠাৎ জ্ঞান হারাতে পারেন।
  • গরমে ঘাম বেশি হয় বলে এ সময়ে সাড়ে তিন থেকে চার লিটার পানি, শরবত ও পাতলা চা খেলে ভালো হয়।
  • যাদের সারাক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করতে হয় তারা সঙ্গে লবণ, লেবু, চিনি সম্ভব হলে ছাতু মিশিয়ে শরবত করে সঙ্গে রাখুন। শরীর দুর্বল লাগলে ও ঘাম বেশি হলে দু-তিন ঢোঁক করে খেতে পারেন। কাজে এনার্জি পাবেন।
  • তবে গরমকাল বলে পিপাসা লাগুক বা না লাগুক দু-তিন লিটার পানি খেতে হবে তা কিন' নয়, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের পানি পিপাসা পায়, সেই অনুযায়ী পানি খেতে হবে।
  • লবণ, লেবু ও ছাতুর শরবত শরীর ঠাণ্ডা রাখে।
  • পানি ঢালা ঠাণ্ডা ভাত (পান্তা ভাত) খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে, ঘুমও ভালো হয়।
  • গরমে ফল বেশি করে খেলে পানির তেষ্টা অনেকটাই কমে। তার সঙ্গে ফলে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর তরতাজা রাখতে সাহায্য করে। জামরুল, তরমুজ, লিচু, শসা, পাকা পেঁপে, পাকা আম যথেষ্ট পরিমাণে খাবেন। পাকা আমের ভিটামিন ‘এ’ ভবিষ্যতের জন্য শরীরে স্টোর করা যায়।
  • কোল্ড ড্রিংসের বদলে টেট্রা প্যাকের জুস ভালো, তবে সবচেয়ে ভালো বাড়িতে তৈরি ফ্রেশ ফ্রুট জুস ও টাটকা ফল।
  • এ সময়ে বেশি তেলমসলা দেয়া মাটন, চিকেন, মাছ না খেয়ে মুরগির স্টু, মাছের পাতলা ঝোল- এই ধরনের খাবার খেলে ভালো হয়।
  • তবে প্রত্যেকের খাবারের রুচি ও সহ্য ক্ষমতা আলাদা আলাদা হওয়ায় গাইডলাইন অনুযায়ী শরীর বুঝে খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
  • মনোজগত প্রতিবেদন

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Facebook Themes