স্থূলতা ওজনাধিক্য শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। কারণ এটি এখন বহুল আলোচিত একটি বিষয়। নাগরিক জীবনে কারও কারও ক্ষেত্রে স্থূলতা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওজনাধিক্যের জন্য বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমরা সকলেই ওজনাধিক্য নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। কিন' দেখা যায় বিভিন্ন কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আসলে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছা এবং চেষ্টা। আসুন আমরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ কয়েকটি টিপস জেনে নিই।
- প্রতিবেলা খাবার আগে অবশ্যই এক গ্লাস পানি পান করুন।
- খাবার সময় মজার বা প্রিয় খাবার দেখে উদরপূর্তি করে না খেয়ে আধপেট খান/পেট খালি রেখে খান।
- খাবারের সময় অবশ্যই চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে খান। বিশেষ করে মাছ ও মাংসের চর্বি, ঘি, মাখন, পনির ইত্যাদি।
- ক্ষুধা না পেলে কখনোই খাবেন না।
- বাজি ধরে বা বন্ধুদের সাথে সেলিব্রেট করার সময় খাবার না খেয়ে বরং কোথাও ঘুরে আসুন।
- ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো উচ্চ ক্যালরি ও উচ্চ ফ্যাটবহুল খাবার। এসব খাবারের সাথে আপনি নিজের অজান্তেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলেছেন।
- যতটা সম্ভব হাঁটাহাঁটি করুন। যেমন- কাছাকাছি দূরত্বে কোথাও হেঁটে যান, উপরে উঠতে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়িতে চলুন।
- স্ন্যাকস হিসেবে ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- কারও আশায় না থেকে নিজের ছোট ছোট কাজ নিজেই করুন। যেমন- এক গ্লাস পানির জন্য কাউকে না বলে নিজেই উঠে গিয়ে নিয়ে নিন।
- অনেকেই বলেন, সময়ের অভাবে এক্সারসাইজ করতে পারেন না তাই যখনই সময় পান ফ্রি হ্যান্ড কিছু এক্সারসাইজ করুন। যেমন- সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানাতে বসেই কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন।
- সপ্তাহে অন্তত একদিন নিজের ওজন মাপুন। কারণ ওজন যদি স্বাভাবিক থাকে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
আসুন আমরা স্থূলতাকে ভয় না পেয়ে সহজভাবে একে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। কারণ স্থূলতা বা ওজনাধিক্য থেকে পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাইপারটেনশন ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির ইচ্ছার সাথে সাথে বন্ধুত্বের পরিবেশও একান্ত কাম্য।
লেখক : নিউট্রিশনিস্ট এন্ড ওয়েট ম্যানেজমেন্ট
কনসালটেন্ট
ডার্মালেজার সেন্টার
৫৭/ই, পান'পথ, ঢাকা
কনসালটেন্ট
ডার্মালেজার সেন্টার
৫৭/ই, পান'পথ, ঢাকা
সাইক্লিং ভালো ব্যায়াম
ডা. মো. শহীদুল্লাহ
সাইকেল অর্থাৎ বাইসাইকেল চালানো হাঁটা এবং সাঁতার কাটার মতো একটি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। রক্তচাপও কমে। সপ্তাহে ৩৫ কিলোমিটারের মতো পথ সাইকেল চালালে করোনারি হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায় ৫০ শতাংশেরও বেশি।
নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক। সাইকেল চালালে শরীরের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। ঘণ্টায় মোটামুটি ২০ কিলোমিটার গতিতে সাইকেল চালালে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ ক্যালরি শক্তি খরচ হয়। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনের এক গবেষণার কথা এটি। এত এনার্জি খরচ হয় বলে নিয়মিত সাইকেল চালালে যারা মোটা তাদের বাড়তি ওজন কমে শরীরের ওজন হয়ে যায় স্বাভাবিক। নিয়মিত সাইকেল চালালে মোটা লোকদের স্বাভাবিক ওজন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ-এ তথ্য পাওয়া গেছে আর্কাইভস অব পেডিয়েট্রিকস অ্যান্ড এডোলিসেন্ট মেডিসিন নামক জার্নালের ২০০৮ সালের এক সংখ্যায়।
আর যাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিক নিয়মিত সাইকেল চালালে তাদের শরীরের ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও যথেষ্ট কম। ২০০৮ সালে প্রিভেন্টিভ মেডিসিন নামক এক জার্নালে অস্ট্রেলিয়ার একজনের ওপর পরিচালিত গবেষণার ফল এরূপই। দেখা গেছে যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে সাইকেল চালিয়ে যান তাদের মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ৪০ শতাংশ। পক্ষান্তরে যারা তাদের কর্মস্থলে গাড়িতে চলে যান তাদের মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি, প্রায় ৬১ শতাংশ। নিয়মিত সাইকেল চালালে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং শরীরের ওজন কমালে কিংবা শরীরের ওজন সঠিক রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। নিয়মিত সাইকেল চালালে পাওয়া যাবে এসব উপকার। মুক্ত বাতাসে সাইকেল চালনায় শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। ফলে ফুসফুসে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এতে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। শ্বাসনালির অসুখ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
সাইকেল চালালে রোগ প্রতিরোধী কিছু কোষও তৈরি হয় শরীরে। ফলে সাধারণভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত সাইকেল চালানো পেশি গঠনে সহায়ক, বিশেষ করে নিম্নাঙ্গের ঊরু কাফ ও পিঠের পেশি। এতে ঊরু, কাফ ও নিতম্ব হয় সুগঠিত। নিয়মিত সাইকেল চালালে জানুসন্ধি এবং পায়ের অন্যান্য সন্ধি সবল হয়। আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
সাইকেল চালানোর সময় শরীর ঘামে বেশ। ঘামের সাথে শরীরের বর্জ বের হয়ে যায়। ত্বক ও শরীর থাকে সুস'। সাইকেল চালালে রক্তে নিঃসরণ হয় ভালো লাগার হরমোন এন্ডোরফিন। তাই মুক্ত বাতাসে সাইকেল চালালে মনে প্রশান্তি আসে, মন ভালো লাগে। এন্ডোরফিন স্ট্রেসও কমায়। শিশু সাইকেল চালালে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সাইকেল চালানো তাই শিশুর সার্বিক বিকাশে সহায়ক। সাইকেল চালানোয় এতসব উপকার যেখানে সেখানে নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলা মন্দ নয় মোটেও। সেটা অফিসে যাওয়ার জন্যই হোক, বাজারে যাওয়ার জন্যই হোক, অন্য কোনো প্রয়োজনে হোক কিংবা শুধু ব্যায়ামের জন্যই হোক।
ডা. মো. শহীদুল্লাহ
সাইকেল অর্থাৎ বাইসাইকেল চালানো হাঁটা এবং সাঁতার কাটার মতো একটি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। রক্তচাপও কমে। সপ্তাহে ৩৫ কিলোমিটারের মতো পথ সাইকেল চালালে করোনারি হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায় ৫০ শতাংশেরও বেশি।
নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক। সাইকেল চালালে শরীরের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। ঘণ্টায় মোটামুটি ২০ কিলোমিটার গতিতে সাইকেল চালালে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ ক্যালরি শক্তি খরচ হয়। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনের এক গবেষণার কথা এটি। এত এনার্জি খরচ হয় বলে নিয়মিত সাইকেল চালালে যারা মোটা তাদের বাড়তি ওজন কমে শরীরের ওজন হয়ে যায় স্বাভাবিক। নিয়মিত সাইকেল চালালে মোটা লোকদের স্বাভাবিক ওজন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ-এ তথ্য পাওয়া গেছে আর্কাইভস অব পেডিয়েট্রিকস অ্যান্ড এডোলিসেন্ট মেডিসিন নামক জার্নালের ২০০৮ সালের এক সংখ্যায়।
আর যাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিক নিয়মিত সাইকেল চালালে তাদের শরীরের ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও যথেষ্ট কম। ২০০৮ সালে প্রিভেন্টিভ মেডিসিন নামক এক জার্নালে অস্ট্রেলিয়ার একজনের ওপর পরিচালিত গবেষণার ফল এরূপই। দেখা গেছে যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে সাইকেল চালিয়ে যান তাদের মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ৪০ শতাংশ। পক্ষান্তরে যারা তাদের কর্মস্থলে গাড়িতে চলে যান তাদের মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি, প্রায় ৬১ শতাংশ। নিয়মিত সাইকেল চালালে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং শরীরের ওজন কমালে কিংবা শরীরের ওজন সঠিক রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। নিয়মিত সাইকেল চালালে পাওয়া যাবে এসব উপকার। মুক্ত বাতাসে সাইকেল চালনায় শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। ফলে ফুসফুসে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এতে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। শ্বাসনালির অসুখ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
সাইকেল চালালে রোগ প্রতিরোধী কিছু কোষও তৈরি হয় শরীরে। ফলে সাধারণভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত সাইকেল চালানো পেশি গঠনে সহায়ক, বিশেষ করে নিম্নাঙ্গের ঊরু কাফ ও পিঠের পেশি। এতে ঊরু, কাফ ও নিতম্ব হয় সুগঠিত। নিয়মিত সাইকেল চালালে জানুসন্ধি এবং পায়ের অন্যান্য সন্ধি সবল হয়। আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
সাইকেল চালানোর সময় শরীর ঘামে বেশ। ঘামের সাথে শরীরের বর্জ বের হয়ে যায়। ত্বক ও শরীর থাকে সুস'। সাইকেল চালালে রক্তে নিঃসরণ হয় ভালো লাগার হরমোন এন্ডোরফিন। তাই মুক্ত বাতাসে সাইকেল চালালে মনে প্রশান্তি আসে, মন ভালো লাগে। এন্ডোরফিন স্ট্রেসও কমায়। শিশু সাইকেল চালালে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সাইকেল চালানো তাই শিশুর সার্বিক বিকাশে সহায়ক। সাইকেল চালানোয় এতসব উপকার যেখানে সেখানে নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলা মন্দ নয় মোটেও। সেটা অফিসে যাওয়ার জন্যই হোক, বাজারে যাওয়ার জন্যই হোক, অন্য কোনো প্রয়োজনে হোক কিংবা শুধু ব্যায়ামের জন্যই হোক।
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ
কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ
কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ
ময়মনসিংহ
sunargo.info
1 মন্তব্য(সমূহ):
আমার ওজন কম কিন্তু পেট মোটা। এ জন্য কি করতে পারি বলবেন কি?
Post a Comment