হৃদযন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক এর কম্পন। এ কম্পন ছাড়া কোনো জীবিত মানুষের কথা কল্পনা করা যায় না। তবে শুনতে আজব ঠেকলেও সত্য, হৃদযন্ত্রে কোনো রকম কম্পন ছাড়াই পাঁচ-পাঁচটি সপ্তাহ কাটিয়ে দিয়েছেন টেঙ্াসের ক্রেইগ লুইস।
৫৫ বছর বয়েসী লুইস ছিলেন বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তার হৃৎপিণ্ড পুরোপুরি বিকল হয়ে গেলে প্রতিস্থাপন করা হয় একটি কৃত্রিম হৃদযন্ত্র। প্রচলিত কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের চেয়ে এটি ছিল একেবারেই ভিন্ন। অনেক বছর আগে থেকেই কৃত্রিম যে হৃদযন্ত্র ব্যবহার
৫৫ বছর বয়েসী লুইস ছিলেন বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তার হৃৎপিণ্ড পুরোপুরি বিকল হয়ে গেলে প্রতিস্থাপন করা হয় একটি কৃত্রিম হৃদযন্ত্র। প্রচলিত কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের চেয়ে এটি ছিল একেবারেই ভিন্ন। অনেক বছর আগে থেকেই কৃত্রিম যে হৃদযন্ত্র ব্যবহার
করা হচ্ছে, সেটিও কাজ করে ঠিক মানুষের হৃদযন্ত্রের মতোই। স্বাভাবিক হৃদযন্ত্রের মতোই সেটি রক্তকে পাম্প করে পাঠিয়ে দেয় সারা দেহে। ফলে কৃত্রিম এ যন্ত্রেও অনুভূত হয় স্পন্দন। কিন্তু ক্রেইগ লুইসের শরীরে স্থাপন করা হৃদযন্ত্রটি ছিল ভিন্ন। এটি পাম্প করার পরিবর্তে নিজের মধ্যে রক্তের ঘূর্ণি তৈরি করত। ফলে দেহে কোনো হৃদস্পন্দন অনুভূত হয় না।
ক্রেইগ লুইসের অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হলে তাঁর স্ত্রী লিন্ডা দ্বারস্থ হন টেঙ্াস হার্ট ইনস্টিটিউটের। সেখানকার চিকিৎসক ডা. বিলি কোহন ও ডা. ও এইচ বাড তাঁদের উদ্ভাবন করা নতুন প্রযুক্তির ওই হৃদযন্ত্র লুইসের দেহে স্থাপন করেন। এ নতুন হৃদযন্ত্রের সহায়তায় ক্রেইগ লুইস বেঁচেছিলেন পাঁচ সপ্তাহ। এ সময় তাঁর শারীরিক অবস্থার অনেক উন্নতিও দেখা যায়। পরে তিনি মারা যান। তবে সেটি এ যন্ত্রের ব্যর্থতার জন্য নয়, তিনি মারা যান অন্যান্য রোগের জটিলতার কারণে। কিডনি ও লিভার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় লুইস মৃতপ্রায় অবস্থা দাঁড়ান। এ অবস্থায় তাঁর পরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, লুইসকে মানবসুলভ স্বাভাবিক মৃত্যুর সুযোগ দেওয়াই তাঁর জন্য মঙ্গলজনক। পরে চিকিৎসকরা ওই কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ করে লুইসকে সে সুযোগ করে দেন।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণ যে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রচলিত রয়েছে, সেটি প্রতিদিন এক লাখ বার ও বছরে সাড়ে তিন কোটি বার পাম্প করে। এতে এ যন্ত্রের ওপর যে চাপ পড়ে তাতে সেটি ক্রমশ কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে, আর এর ‘রক্ষণাবেক্ষণ’ বেশ কঠিন। কিন্তু তাঁদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তির এ হৃৎপিণ্ডে এ সমস্যা নেই, যেহেতু এটি পাম্প করে না। পরিবর্তে এটি রক্তকে সারা শরীরে অনবরত ঘূর্ণির মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, নতুন প্রযুক্তির এ কৃত্রিম হৃদযন্ত্র অনেক বেশি কার্যকর ও যুগোপযোগী। তাঁরা এটিকে হৃদরোগের চিকিৎসার ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখছেন। সূত্র : দ্য ডেইলিমেইল অনলাইন।
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment