Total Pageviews

Wednesday, March 14, 2012

নতুন নতুন রোগবালাই

জলবায়ুর পরিবর্তন, জীবনাচার ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আর জীববৈচিত্র্য পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন জলবায়ুর পরিবর্তন, জীবনাচার ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আর জীববৈচিত্র্য পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন রোগবালাইয়ের উদ্ভব ঘটছে। কিছু কিছু রোগের পুনরাবির্ভাব ঘটছে
সহকারী অধ্যাপক, রোগতত্ত্ব বিভাগ, নিপসম।

বদলাচ্ছে পরিবেশ, বদলাচ্ছে জীবনাচার; বদলেযাচ্ছে রোগবালাইয়ের ধরন। আবির্ভাব-পুনরাবির্ভাব ঘটছে নতুন নতুন রোগবালাইয়ের। বাড়ছে জনস্বাস্থ্য ব্যয়।দৈনন্দিন জীবনে আচরণ না পাল্টালে জনস্বাস্থ্য-সুরক্ষা দুরূহ হয়েযাবে। নতুন নতুন রোগবালাই প্রতিরোধে জীবনাচার বদলানো জরুরি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাচ্ছে রোগবালাইয়ের ধরন। সামগ্রিকভাবে গোটা দুনিয়ায় কমছে সংক্রামক রোগ আর বাড়ছে অসংক্রামক রোগবালাই। জলবায়ুর পরিবর্তন, জীবনাচারে পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন আর জীববৈচিত্র্যের পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন রোগবালাইয়ের উদ্ভব ঘটছে। কিছু কিছু রোগের পুনরাবির্ভাব ঘটছে।
আসছে নতুন নতুন ভাইরাস
জনস্বাস্থ্যের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন অণুজীবের কারণে মহামারি দেখা দিয়েছে; বিশেষ করে বিভিন্ন সময়ে নভেল (আগেছিল না এমন) ভাইরাসের উদ্ভব জন্ম দিয়েছে নতুন নতুন রোগের। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিশ্ববাসী তথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এসব নতুন (ইমার্জিং) এবংপুনরাবির্ভূত (রি-ইমার্জিং) রোগবালাই নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশেজনসংখ্যা এবংঘনবসতির কারণে এ ধরনের নতুন নতুন ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই আসন গেড়ে বসতে পারে।
প্রাণীবাহিত রোগ
জুনুটিক ডিজিজ। গোটা দুনিয়ায় জনস্বাস্থ্যেরক্ষেত্রে জুনুটিক ডিজিজ বা প্রাণীবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব হরহামেশাই ঘটছে। আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে অ্যানথ্রাক্স নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়েছে। সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ায় এটি পশু থেকে মানুষে ছড়াতে পারেনি তেমনভাবে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তোলপাড় হয়েছেফ্লু মহামারি নিয়ে। এইচফাইভএনওয়ান কিংবা এইচওয়ানএনওয়ান ভাইরাসজনিত বার্ড ফ্লু এবংসোয়াইন ফ্লু নিয়ে গোটা বিশ্বে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে ছিল। আগাম সতর্কতা, জনস্বাস্থ্যের রোগ-নিরীক্ষণ এবংআন্তর্জাতিক উদ্যোগের কারণে এগুলো অতীতের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রের বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবংএ বিষয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলোর (যেমন, আইইডিসিআর) সময়োচিত পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল।
নতুন নতুন ফ্লু
পাল্টে যাচ্ছে ভাইরাস জ্বর।ভাইরাসের ধর্মই হচ্ছে প্রতিনিয়ত এর চরিত্র বদল, আদল পরিবর্তন। ফলে ঋতু পরিবর্তনের সময়নিত্যনতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে; কখনো ছড়ায় প্রাণীর মাধ্যমে, কখনো বাতাসে। সিজনাল ফ্লু প্রতিরোধে উন্নত বিশ্বে টিকার ব্যবস্থা রয়েছে। বছরে একবার এই টিকা নিলে ঋতুভিত্তিক ফ্লুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের দেশেব্যাপকভাবে এর প্রচলন নেই। তাই আমাদের প্রতিরোধবিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে হবে।
ফ্লু প্রতিরোধে
হাঁচি-কাশিতে ছড়ায়। তাই হাঁচি-কাশির সময়হাতের কনুই উঁচু করে মুখ-নাক ঢাকতে হবে।আর সম্ভব হলে দিনে চার-পাঁচবার দুই হাত উভয়দিকে সাবান দিয়ে ভালোভাবে ফেনা তুলে ধুতে হবে। একই টিস্যু কয়েকবার ব্যবহার না করা বা রুমাল প্রতিদিন গরম পানিতে ধোঁয়ার মতো ছোট ছোট আচরণ পরিবর্তন করলে অনেক সাধারণ রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
ভেক্টরবাহিত রোগ: চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু, কালাজ্বর
মশা-মাছি দিয়ে ছড়ানো এই রোগগুলো বাড়ছে, দেখা দিচ্ছে নতুন করে। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে আমাদের দেশে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়ে যায়। নগরায়ণের ফলে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি বেড়ে গিয়ে এর প্রাদুর্ভাব ঘটে।শুরুর দিকে এর চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট আপ-টু-ডেট না থাকায় কিছু প্রাণহানিও ঘটে। পরবর্তী সময়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এটি অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এর প্রকোপ না কমলেও চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনার মান বেড়েছে। ডেঙ্গুর পর সাম্প্রতিক সময়ে আরেকটি মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে, যার নাম—চিকুনগুনিয়া।
বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতে এর প্রাদুর্ভাব ছিল; আমরা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছিলাম, এটি বাংলাদেশেও ঢুকবে। দুই বছর ধরে চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন এমন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। একইভাবে বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ত্রিদেশীয় উদ্যোগে এই অঞ্চল কালাজ্বরমুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মাটির ঘরের বেলেমাছি কালাজ্বর ছড়ায়। এতে যকৃৎ (লিভার) ও প্লীহা (স্প্লিন) বড় হয়ে যায়। সময়মতো চিকিৎসায় রোগ ভালো হয়।
ভেক্টর প্রতিরোধে
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশা প্রতিরোধ করতে হবে। জমে থাকা পরিষ্কার পানি কিংবা নর্দমার পানিতে প্রতিনিয়তই স্প্রে করতে হবে। যে এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে, সেই এলাকায় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য। কালাজ্বর প্রতিরোধে রোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে মাটির দেয়ালের বা মাটির মেঝের বাড়িগুলোতে মাটি থেকে ছয়ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ওষুধ স্প্রে করে বেলেমাছি নির্মূল করতে হবে।
এমডিআর যক্ষ্মা
যক্ষ্মার চিকিৎসা আছে সম্পূর্ণভালো হওয়ার। তবু যক্ষ্মা বাড়ছে নতুন ধরনের। সময়মতো ওষুধ না খাওয়া এবংঅসম্পন্ন চিকিৎসার জন্যমাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট বা এমডিআর যক্ষ্মার প্রকোপ বাড়ছে।
পুরো কোর্স সম্পন্ন না করে ওষুধ ছেড়ে দেওয়ার ফলেএই যক্ষ্মা পুনরায় দেখা দিচ্ছে। এতে চিকিৎসা ব্যয়বেড়ে যাচ্ছে এবংওষুধের কার্যকারিতাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এমডিআর প্রতিরোধে
যক্ষ্মার ওষুধগুলো নিয়মিত, সময়মতো পুরো কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। যদি কেউ মাঝপথে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়েথাকেন, তাহলে অতিসত্বর পুনরায় চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
বাড়ছে এনসিডি বা অসংক্রামক রোগ
নন-কমিউনিক্যাবল ডিজিজ বা অসংক্রামক রোগ বাড়ছে বাংলাদেশেও। কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়া, দ্রুত নগরায়ণ, পরিবেশদূষণ এবংতেল-চর্বিজাতীয় খাবারে আসক্তির কারণে এনসিডি বেড়ে যাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হূদেরাগ, আর্সেনিকোসিস, হাইপারলিপিডেমিয়া, শ্বাসনালির বিভিন্ন রোগ, মনোবৈকাল্য, মনোসামাজিক চাপ ইত্যাদি রোগবালাই ও স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিনিয়তই বাড়ছে।ভবিষ্যতে এ নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে রইল।
প্রয়োজন স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ
মানুষ বাড়ছে, পরিবেশ পাল্টাচ্ছে। রোগবালাই বাড়ছে, অণুজীবের ধরন পাল্টাচ্ছে। নগরায়ণ বাড়ছে, জীবনযাত্রার ধরন পাল্টাচ্ছে। এখন আমরা যদি আমাদের আচরণ না পাল্টাই, চারপাশের পরিবেশকে স্বাস্থ্যবান্ধব না করি, তবে নিত্যনতুন রোগবালাই আমাদের ভোগাবে। বাড়ছেস্বাস্থ্য ব্যয়;বাড়বে বৈকল্য। আসুন, আচরণ পাল্টাই পরিবেশ রক্ষায়, নিজেদের রক্ষায়। প্রথম আলোর ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ স্লোগান সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়।

কামরাঙার কিছু কথা

এই সময়ের দৃষ্টিনন্দন ফল কামরাঙা। ভিটামিন সি-তে পূর্ণ কামরাঙা। কাজ করে চুল, ত্বক, নখ ও দাঁতের ওপর। গবেষণা করে দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত ভরা পেটে (অবশ্যই যাঁদের কিডনির কোনো অসুখ নেই) কামরাঙা খান, তাঁদের চুল, ত্বক, নখ ও দাঁত তুলনামূলকভাবে উজ্জ্বল, ভঙ্গুরহীন হয়। সমসাময়িক সংক্রামক রোগগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কামরাঙা। অতিরিক্ত মোটা মানুষের দেহের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এই ফল। তবে কিডনিতে পাথর, ইনফেকশন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য এই ফল পরিহার করা উচিত সম্পূর্ণভাবে। আবার যাঁদের দীর্ঘ বছর ধরে ডায়াবেটিস, মোটার অসুখ রয়েছে ও হার্ট দুর্বল, তাঁদের জন্যও এই ফল বর্জনীয়। তাই বলে কামরাঙা পুষ্টিহীন এমন নয়। এতে রয়েছে উচ্চমানের ভিটামিন এ এবং সি। বাড়ন্ত শিশুদের জন্য, খেলোয়াড়, অ্যাথলেটদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারী। কামরাঙায় নেই কোনো চর্বি বা ফ্যাট। তাই এই ফল খেলে রক্তে চিনি বা চর্বি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। এতে যে আঁশ রয়েছে তা কোষ্ঠকাঠিন্য, পাকস্থলীর ক্যানসার দূর করে। অতিরিক্ত টক লাগলে ডাল বা তরকারির সঙ্গে রান্না করে খেতে পারেন। তবে কোনো অবস্থাতেই কেউ এই ফল খালি পেটে খাবেন না।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই ফল ব্রণ হওয়ার পরিমাণ কমায়। এতে বিদ্যমান খনিজ লবণগুলো দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। কিছু পরিমাণ জিংকও রয়েছে এতে। তবে অতিরিক্ত টক হওয়ার জন্য ডায়রিয়া চলাকালে বা ডায়রিয়া ভালো হওয়ার পরপরই এই ফল খাবেন না।
ফারহানা মোবিন prothom-alo

Tuesday, March 13, 2012

খাওয়ায় সহজ পরিবর্তন হূদেরাগের ঝুঁকি কমায়

পাতে লবণ খাওয়া এখনই ছেড়ে দিন, উচ্চ রক্তচাপ ও হূদেরাগের ঝুঁকি কমবে পাতে লবণ খাওয়া এখনই ছেড়ে দিন, উচ্চ রক্তচাপ ও হূদেরাগের ঝুঁকি কমবে
ছবি: খালেদ সরকার
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।

হূদেরাগ এখন সমস্যা পৃথিবীজুড়ে। উন্নয়নশীল দেশেও এটি বড় সমস্যা। সবচেয়ে সচরাচর হূদেরাগ হলো করোনারি হূদেরাগ এবং এ থেকে হার্ট অ্যাটাক। তবে সুসংবাদ হলো, জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে, হূদ্স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে আমরা অনেক কমিয়ে আনতে পারি করোনারি হূদেরাগের ঝুঁকি।
লবণঝাঁকুনি ঝেড়ে নুন খাওয়া ছাড়ুন
শিল্পোন্নত দেশ, যেমন—আমেরিকায় প্রতিদিন লোকজন তিন হাজার ৫০০ গ্রাম নুন অবলীলায় খাচ্ছেন: এর তিন-চতুর্থাংশ আসে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও রেস্তোরাঁর খাবার থেকে। সে দেশের ন্যাশনাল হার্ট ও লাং ইনস্টিটিউট বলছে, নুন খাওয়া অর্ধেকে নামিয়ে আনলে প্রতিবছর হূদেরাগ ও রক্তনালি রোগে দেড় লাখ মৃত্যু ঠেকানো যাবে।
সোডিয়াম গ্রহণ কমাতে হলে এর বদলে খেতে হবে ফল, সবজি, লো-ফ্যাট দুধজাত খাবার। আমাদের দেশেও ফাস্টফুড, রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়া বাড়ছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, তাই সাবধান হওয়া উচিত অবিলম্বে।
যোগ করুন হূদ্স্বাস্থ্যকর চর্বি
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ওমেগা-৩ মেদঅম্লসমৃদ্ধ খাবার খেলে কমে আসে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড। খুব উঁচু মাত্রায় ওমেগা-৩ মেদঅম্ল আছে শীতল পানির মাছ, যেমন—বুনো স্যামন মাছ, ম্যাকরিল, সার্ডিনস, হেলিবাট বা হেবিং। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ: প্রতি সপ্তাহে মাছের অন্তত দুটি সার্ভিং।
তাই মাছ খান স্বচ্ছন্দে। মাছে-ভাতে বাঙালি। সামুদ্রিক মাছ, মিঠা পানির মাছ যা-ই হোক। মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট খেলে দেখা যায় কমে হূদ্ক্ষতিকর এলডিএল, বাড়ে হূদিহতকর এইচডিএল। এই ফ্যাটের ভালো উৎস হলো অ্যাভোকেডো, বাদাম, বাদাম মাখন, জলপাই তেল।
যোগ করুন বেশি বেশি আঁশ
প্রতিদিন ৩৫-৪০ গ্রাম আঁশ হবে লক্ষ্য। আঁশ কমায় কোলেস্টেরল: একসঙ্গে বন্ধনাবদ্ধ হয়ে নিষ্ক্রান্ত করে শরীর থেকে। কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যাঁদের খাবারে নিয়মিত আঁশ থাকে, তাঁদের এলডিএল কমে যায় ২৫ শতাংশ। আঁশ খেলে ওজন হ্রাসেও বেশ সুবিধা হয়, আঁশসমৃদ্ধ খাবার পেট ভরাট করে সহজে, তাই দিনে কম খেলেও তৃপ্তিসুখ মেলে কম সময়েই।
মসলা যোগ করুন আনন্দে
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যে মসলা যোগ করলে তা হূদিহতকর। লঙ্কা বেশ মজবুত করে হূদ্যন্ত্রকে। ধমনি ও কৈশিকাকেও। কমায় কোলেস্টেরলও। জার্নাল অব ডায়াবেটিস কেয়ার-এ প্রকাশিত নিবন্ধে দেখানো হয়েছে, অর্ধেক চা-চামচ দারচিনি প্রতিদিন কমায় এলডিএল কোলেস্টেরল। অনেক লতাগুল্মে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ধনেপাতা, মেথিশাক, পুদিনাপাতা, আমেরিকার ওমেগানো এসব বেশ সমৃদ্ধ। রসুন খেলে কমে রক্তের কোলেস্টেরল। আদা হলো রক্তকে পাতলা করার ওষুধ, প্রদাহরোধীও বটে।
বেছে নিন খাদ্য, যাতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
হূদ্সুস্বাস্থ্যনির্ভর করে উন্মুক্ত, নমনীয় ধমনির ওপর, যেগুলো দিয়ে দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে রক্ত। গাঢ় চকলেট, কোকো, উদ্ভিজ্জ, যেমন—রেড ওয়াইন ও সবুজ চা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। রক্তস্রোতে মুক্তমূলকদের এটি ক্ষতি রোধ করে। prothom-alo

মেয়েদের অবাঞ্ছিত লোম

বিব্রত হওয়ার কিছু নেই, যথাযথ চিকিত্সায় এ ধরনের সমস্যায় প্রতিকার পাওয়া যায় বিব্রত হওয়ার কিছু নেই, যথাযথ চিকিত্সায় এ ধরনের সমস্যায় প্রতিকার পাওয়া যায়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, বারডেম হাসপাতাল।

মেয়েটির আপাদমস্তক বোরকায় ঢাকা। কালো হিজাবের মধ্যে সুন্দর টানা টানা চোখ কেবল দেখা যায়। বয়স ১৫ কি ১৬। মুখের কাপড় সরাতে এই কঠিন পর্দার কারণটা বোঝা গেল। মেয়েটির ঠোঁটের ওপর, চিবুক, কপাল ও জুলপির কাছে ঘন লোমের রেখা; উঠতি বয়সের ছেলেদের যেমনটা দেখা যায়। এর জন্য বন্ধুবান্ধব, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে নিশ্চয় অনেক হেনস্তা হতে হয়েছে তাকে। বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতেই তার এই মুখ ঢেকে চলা; স্বীকার করল মেয়েটি ছলছল চোখে। সঙ্গে রয়েছে আরেক উপদ্রব—অনিয়মিত মাসিক। এক মাস হয় তো দুই মাস হয় না। বাড়িতে মা দুশ্চিন্তায় অস্থির। শেষ পর্যন্ত দূর-সম্পর্কের এক চিকিৎসক-আত্মীয়ার সঙ্গে কথা বলে মা বুঝেছেন যে হরমোনের সমস্যার কারণে মেয়েদের এসব সমস্যা দেখা দেয়। আর এর সুনির্দিষ্ট সহজ চিকিৎসাও আছে।
অবাঞ্ছিত লোম: কী ও কেন
আর সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো মানুষের শরীর সূক্ষ্ম লোম বা চুলে ঢাকা। এর মধ্যে বিশেষ বিশেষ স্থানে চুলের বৃদ্ধি ও গড়ন হরমোনের ওপর নির্ভরশীল। কৈশোরে পুরুষালি হরমোন এন্ড্রোজেনের প্রভাবে কিশোর ছেলেদের দাড়ি-গোঁফ গজায়; বুক, তলপেট ও ঊরুতে চুল বাড়ে, জুলপি বড় হয়। মেয়েদের শরীরে এন্ড্রোজেন খুবই কম মাত্রায় থাকে বলে এসব স্থানে ছেলেদের মতো চুল গজায় না। তবে মেয়েদের দেহে কখনো পুরুষালি হরমোন এন্ড্রোজেনের আধিক্য দেখা দিলে এমনটা হতে পারে। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মেয়ের এমনিতেই কোনো কারণ ছাড়াই শরীরে বেশি চুল থাকে। এ জন্য পরিবারে মা-বোনদের এ রকম ছিল কি না, তা জানা দরকার। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত লোমের অধিকারী মেয়েরা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত। এরা সাধারণত ওজনাধিক্য বা স্থূলতায় ভোগে, কৈশোরে অবাঞ্ছিত লোম, অনিয়মিত মাসিক ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত হয়, এদের মুখে ব্রণও বেশি হয়। হরমোন পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এদের শরীরে পুরুষালি হরমোন এন্ড্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি, মেয়েলি হরমোনগুলোতেও কিছু তারতম্য আছে। এই মেয়েদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে চর্বির আধিক্য হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। পরবর্তী সময় এদের একটি বড় অংশ বন্ধ্যতা সমস্যায় ভোগে।
যদি অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা খুব দ্রুত সময়ে অনেক মারাত্মক আকারে দেখা দেয়, তবে দেখতে হবে শরীরে এন্ড্রোজেন নিঃসরণকারী কোনো টিউমার বা ক্যানসার হয়েছে কি না। স্টেরয়েড ট্যাবলেট খেলে বা দেহে স্টেরয়েড হরমোনের আধিক্য থাকলেও অবাঞ্ছিত লোম বেশি হয়।
বিব্রত হওয়ার কিছু নেই
সত্যিই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রথমেই দেখতে হবে, অতিরিক্ত পুরুষালি হরমোন এন্ড্রোজেন কোথা থেকে নিঃসৃত হচ্ছে; যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে বাইরে থেকে ইনজেকশন বা দেহের অভ্যন্তরে কোনো টিউমার নেই, তবে অন্যান্য প্রমাণের নিরিখে পলিসিস্টিক ওভারি আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। মজার ব্যাপার, এই কিশোরীরা ওজন কমাতে সমর্থ হলেই নানা সমস্যা আপনাআপনিই সেরে যায়। যথাযথ খাদ্যনিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন অনেকখানি কমাতে পারলে মাসিক নিয়মিত হয়, লোম কমে আসে এবং ব্রণও কমে যায়। ওজন ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে অনেক সময় ওষুধ ব্যবহার করা হয়। মাসিক নিয়মিত করার জন্য কখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা অন্যান্য হরমোনজাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে কৈশোরেই এদের ভবিষ্যৎ ডায়াবেটিস ও রক্তে চর্বির ঝুঁকি সম্পর্কে সাবধান হতে হবে, পরীক্ষা করতে হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে হবে। এই মেয়েরা পরবর্তী সময়ে গর্ভবতী হলে অবশ্যই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
দরকার ধৈর্য ও সঠিক জীবনাচরণ
আমাদের শরীরে একটি চুলের আয়ু প্রায় ছয় মাস। তাই চিকিৎসায় ফল পেতে ছয় মাসের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তাই এই রোগের চিকিৎসায় প্রথমেই দরকার ধৈর্য। অবাঞ্ছিত লোম ওঠানোর অনেক পদ্ধতি আছে, যেমন—থ্রেডিং, ব্লিচিং, শেভ করা, ইলেকট্রলাইসিস বা ডায়াথারমির মাধ্যমে হেয়ার রিমুভ করা। চিকিৎসার পাশাপাশি এসব পদ্ধতিও প্রয়োগ করা যেতে পারে। পাশাপাশি ওজন কমানো, সঠিক জীবনাচরণ মেনে চলা ও একজন হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা তো চলবেই। কিশোরীর এই ব্রিবতকর সমস্যায় তাই অযথা মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা না করে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা ও চিকিৎসা নেওয়াটা জরুরি। prothom-alo

Thursday, January 5, 2012

শীতে বাতের সমস্যা

রওশন আরা রওশন আরা
মেডিসিন ও বাতরোগ বিশেষজ্ঞ, গ্রীন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ, গ্রীনরোড, ঢাকা।

সমস্যা: আমার মায়ের বয়স ৭০ বছর। হাঁটু ও অন্যান্য সন্ধিতে ব্যথা করে। তবে শীতকালে ব্যথায় প্রায় অচল হয়ে পড়েন। গরম সেঁক, ব্যথার ওষুধ খেলে একটু উপশম হয়, কিন্তু এ সময় তিনি প্রায় চলৎশক্তিহীন থাকেন। এমনটি কেন হয় এবং কীভাবে শীতে একে প্রতিরোধ করা যায়।
নাজমা
পাবনা।
পরামর্শ: আপনার মা সম্ভবত অস্টিওআর্থ্রাইটিসে (বয়সজনিত বাত) ভুগছেন। শীতে সব বাতব্যথাই বেশি অনুভূত হয়। কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল, গরম কাপড় ও হাত-পায়ে মোজা পরাতে পারেন। অস্টিওআর্থ্রাইটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়। তবে ওজন বেশি হলে কমিয়ে, হাঁটুর ওপর চাপ পড়ে এমন কাজ থেকে বিরত থেকে এবং নিয়মিত কিছু হাঁটুর ব্যায়াম করে অপেক্ষাকৃত ভালো থাকা সম্ভব। প্রয়োজনে ব্যথার ওষুধ খেতে পারেন। এ ছাড়া তাঁর শরীরে অন্য কোনো বাত আছে কি না, তা দেখার জন্য বিস্তারিত ইতিহাস ও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারলে ভালো হয়।
সমস্যা: আমার বয়স ৪২। কিছুদিন আগে হঠাৎ হাতের বুড়ো আঙুলের সন্ধি ফুলে যায়। চিকিৎসক পরীক্ষা করে বললেন, ইউরিক এসিড বেড়েছে এবং এসলোরিক ট্যাবলেট খেতে দিলেন। শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ওষুধ না খেয়ে কি ইউরিক এসিড কমানো সম্ভব? উল্লেখ্য, আমার ইউরিক এসিড ছিল ৮ দশমিক ২ মিলিমোল।
শামসুজ্জামান
নীলক্ষেত, ঢাকা।
পরামর্শ: বর্তমানে ইউরিক এসিড কমানোর জন্য ব্যাপক খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন নির্দেশিত নয়। শুধু লাল মাংস (গরু/খাসি) ও সামুদ্রিক মাছ কম খেতে হবে। তবে প্রথমবার আক্রান্ত হলেই সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি এসলোরিক ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের ওপরও ওষুধ সেবনের প্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে। এ বিষয়ে তাই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো।
সমস্যা: আমি একটি কম্পিউটার গ্রাফিক্স ফার্মে কাজ করি। সারা দিন কম্পিউটারের সামনে বসতে হয়। রাতে ফেরার পর প্রায় প্রতিদিনই ঘাড়ে ব্যথা ও টন টন করে। ইদানীং এটি বেড়েছে। আমার কী করা উচিত?
জিল্লুর রহমান
উত্তরা, ঢাকা।
পরামর্শ: আপনার অফিসের কম্পিউটার এবং চেয়ারের উচ্চতা ও দূরত্ব এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যেন কাজ করার সময় ঘাড়ে চাপ কম পড়ে। দীর্ঘ সময় একইভাবে কাজ না করে মাঝেমধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য বিরতি নিয়ে ঘাড় ও পিঠের স্ট্রেচিং করবেন। এ ছাড়া নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করলেও উপকার পাবেন। পরামর্শ দিয়েছেন: রওশন আরা প্রথম আলো

সুখে কাটুক শীত

  • শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত দৌড়ান শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত দৌড়ান
1 2
শীতের এ সময়টা কিন্তু বড় সুখের। ফল আর পিঠাপুলির আমেজে দিনগুলো পার করতে চাইলে সুস্থ থাকাটা যে খুব জরুরি। আর তাই জেনে নিন কেমন করে এড়াবেন শীতের রোগবালাই

একটু সতর্কতা
শীতের রোগজীবাণুগুলো এ সময় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে একজন থেকে আরেকজনে। কীভাবে ছড়ায় জীবাণুগুলো? এ খুব সহজ কথা। সংক্রমিত মানুষের হাত থেকে জীবাণুগুলো আটকে থাকে টেবিলে, টেলিভিশনের রিমোটে, কম্পিউটারের কি-বোর্ড কিংবা বাসের হাতলে। কোনো সুস্থ মানুষ এসব জায়গায় হাত দিলে জীবাণু চলে আসে তার হাতে। তারপর হাত থেকে শরীরে এবং শেষে মুখে ঢুকলেই বিপত্তি। তাই এ সময়টা সংক্রমিত লোকের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা থেকে বিরত থাকুন। আর কিছুক্ষণ পরপর ধুয়ে ফেলুন হাত দুখানা।

দৌড়াতে হবে
শীতের দিনগুলোতে ঠান্ডা আমেজে আলস্য এসে ভর করে। আলসেমিকে পাত্তা না দিয়ে দৌড়াতে বের হোন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী-পুরুষ সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন জোরে হাঁটেন ৪৫ মিনিট করে, তাঁদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা অন্যদের তুলনায় অনেক কম। তবে শীতের সকালে দৌড়াতে বেরোলে গরম কাপড় সঙ্গে নিন।

হেঁশেলের যত্ন
রান্নাঘরের সুরক্ষায় একটু বাড়তি যত্নই নিন। এই ঘর থেকেই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের খাবার আসে টেবিলে। তাই খাবারের সঙ্গে যেন জীবাণু না এসে যায়, এ জন্য চাই বাড়তি সতর্কতা। প্লেট, গ্লাস আর সিংক ধোয়ার স্পঞ্জ কিংবা কাপড়টি প্রতিদিন মাইক্রোওয়েভে দুই মিনিট গরম করে নিন। এ পদ্ধতিতে প্রায় ৯৯ শতাংশ জীবাণু ধ্বংস করা যায়। আর সতর্কতা হিসেবে স্পঞ্জ, কাপড়ের টুকরা মাইক্রোওয়েভে ঢোকানোর আগে ভিজিয়ে নিন। অন্যথায় ফায়ার সার্ভিসকে ডাকতে হতে পারে!

খাওয়া, ব্যায়াম আর ঘুম
শীতে মেলে প্রচুর সবজি। খেতেও হবে। আর মৌসুমি ফলের রসে গলা ভিজিয়ে নিন সুযোগ পেলেই। হালকা ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত। ব্যায়াম একদিকে যেমন কর্মক্ষমতা বাড়াবে, অন্যদিকে মুখেও ফিরিয়ে দেবে রুচি। আর দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। এসব কিছুর মিশেলে শরীরে তৈরি হবে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। দূরে থাকবে রোগ, শীত কাটবে আরামে।
সিদ্ধার্থ মজুমদার  প্রথম আলো

জলবসন্তের বিস্তাররোধে সূর্যালোক!

সূর্যের আলো জলবসন্ত ছড়িয়ে পড়া রোধে সহায়ক পারে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গবেষণা করে দেখেছেন, যেসব এলাকায় অতিবেগুনী রশ্মির (আলট্রা ভায়োলেট) মাত্রা বেশি সেসব এলাকায় জলবসন্তের প্রকোপ কম।

‘ভিরোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

সূর্যালোক কিভাবে জলবসন্তের বিস্তাররোধে সহায়ক হতে পারে তার ব্যাখ্যায় গবেষকরা বলছেন, চামড়ায় থাকা ভাইরাসগুলো সূর্যের আলোয় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়তে পারে। ফলে এগুলো অন্যের দেহে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

তবে অন্যান্য গবেষকেরা তাপমাত্রা, আদ্রতা ও এমনকি জীবনযাত্রার মানসহ আরো বেশ কিছু নিয়ামকের কথা উল্লেখ করেছেন। জলবসন্তের প্রকোপ ঠেকাতে এগুলোরও সমান ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

জল বসন্তের জন্য দায়ী ভ্যারিসেলা-জোস্টার ভাইরাসটি খুবই সংক্রামক। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে এ ভাইরাস মূলত হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে। শরীরে জলযুক্ত গুটি ও দাগের উপস্থিতি এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

অতিবেগুনী রশ্মিতে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার নজির দীর্ঘদিনের। লন্ডনের সেন্ট জর্জেস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর ফিল রাইস মনে করেন, ক্রান্তিমণ্ডলীয় দেশগুলোতে জলবসন্ত কম হওয়া এবং তা কম ছড়ানোর কারণ এটিই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/

‘ক্লান্তি কমাবে যোগ ব্যায়াম’

স্তন ক্যান্সার থেকে আরোগ্যলাভকারীদের ক্লান্তি কমাতে পারে যোগ ব্যায়াম। স¤প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

স্তন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হওয়ার পর এক তৃতীয়াংশ নারীই ক্লান্তিতে ভোগে। আর এ ক্লান্তি তাদের জীবনের গুণগতমানের ওপর প্রভাব ফেলে।

তবে গবেষণায় দেখা যায়, যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্ষয় হওয়া জীবনীশক্তি অনেকাংশেই ফিরে পাওয়া সম্ভব।

ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ছোট একটি গবেষণা করা হয়। এতে স্তন ক্যান্সার থেকে আরোগ্য হওয়া ৩১ জন নারীকে তিনমাস ধরে সপ্তাহে দুই দিন যোগ ব্যায়াম করানো হয়।

যোগ ব্যায়ামের পর দেখা যায়, তাদের মধ্যে ক্লান্তি কমে প্রাণশক্তি বাড়ছে। যোগ ব্যায়ামের ক্লাসে যাওয়া ক্যান্সার থেকে সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ২৬ শতাংশ ক্লান্তি কমেছে এবং ৫৫ শতাংশ প্রাণশক্তি বেড়েছে।

এদিকে আরেক দলকে শুধু ক্যান্সারপরবর্তী স্বাস্থ্য বিষয়ক ক্লাস করানো হয়। এর ফলাফলে দেখা যায়, ওই দলের ক্লান্তি বা অবসাদের মাত্রায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।

ক্যান্সার নামের একটি জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/

স্মৃতিভ্রংশ প্রতিরোধ করতে পারে খাদ্যাভ্যাস

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার ও মাছ স্মৃতিভ্রংশ রোগ বা মস্তিস্কের বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। অন্যদিকে, টুকিটাকি খাবার বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

স্নায়ুবিজ্ঞান সম্পর্কিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বয়স্ক লোকের রক্তে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড আছে তাদের মস্তিস্ক সংকোচনের পরিমাণ কম এবং মানসিক সামর্থ্য অনেক বেশি থাকে।

অন্যদিকে, রক্তে ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকলে মস্তিক সংকোচনের পরিমাণ বেশি হয়। সাধারণত কেক, বিস্কুট ও ভাজা খবারসহ প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার বা ফাস্ট ফুডে ট্রান্স ফ্যাট থাকে।

তাই স্মৃতিভ্রংশ বা আলঝেইমার প্রতিরোধে গবেষকদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রচুর ফলমুল ও শাক-সবজিসহ সুষম খাবার খাওয়া, ধূমপান না করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা পরিমাপ করা।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে, যুক্তরাজ্যের ‘আলঝেইমার’স রিসার্চ’ নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

গবেষণায় ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানতে সরাসরি প্রশ্ন না করে তাদের রক্তের পুষ্টিমান যাচাই করা হয়েছে।

স্মৃতিভ্রংশ গবেষণা কর্মসূচির প্রধান গবেষক ডা. সিমন রিডলে বলেছেন, “এ রোগের ওপর খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব নিরূপণ করতে আরো প্রমাণ প্রয়োজন এবং এক্ষেত্রে বড় পরিসরে ও দীর্ঘ সময় নিয়ে গবেষণা করলেই তা সম্ভব।”

বিবিসি জানায়, আলোচ্য গবেষণায় গড়ে ৮৭ বছর বয়স্ক ১০৪ জন ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করে গবেষণার ফল নিরূপণ করা হয়েছে।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, মনোভাবের পরিবর্তন এবং যোগাযোগ ও কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে ব্যার্থতাই স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Saturday, November 26, 2011

বার্ধক্য ঠেকাতে ‘ড্রাকুলা থেরাপি’

 ‘ড্রাকুলা’ বলতে আমরা এক কথায় বুঝি পিশাচ। যারা মানুষের রক্ত শুষে নেয়। কিন্তু এখন চিকিৎসকরা এই ‘ড্রাকুলা’কে নিয়ে এসেছেন তাদের ল্যাবরেটরিতে। বার্ধক্য ঠেকাতে অবিষ্কার করা নতুন পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে ‘ড্রাকুলা থেরাপি’।
 
এই থেরাপির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এই থেরাপিটি ‘ড্রাকুলা’র রক্ত শুষে নেয়ার পদ্ধতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আবিষ্কার করা হয়েছে বলে একে বলা হয় ‘ড্রাকুলা থেরাপি’।
 
এই থেরাপিতে বলিরেখা এবং বার্ধক্য ঠেকাতে নিজের দেহের রক্ত বের করে, ল্যাবরেটরিতে প্রক্রিয়াজাত করে তা আবার নিজ দেহেই ঢোকানো হয়।
 
এই থেরাপির গবেষক বৃটেনের বিএলকে স্পেশালিটি হসপিটালের প্লাসিট এবং কসমেটিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এএস বাথ একটি সংবাদ মাধ্যমে এই ‘ড্রাকুলা থেরাপি’ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। বাথ বলেন, “এই নতুন পদ্ধতিটি খুবই নির্ভরযোগ্য। আমরা বার্ধক্য ঠেকাতে এখানে রোগীর দেহের রক্ত ব্যবহার করি। রোগীর দেহ থেকে আমরা ১৫-২০ এমএল রক্ত নিই। এবং রক্তের গ্রোথ হরমোনকে প্রকিয়া করি। এরপর তা আবারো রোগীর দেহে প্রয়োগ করি। ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা রক্ত রোগীর মুখমণ্ডলে ঢোকানো হয়।”
 
বাথ আরো জানান, রক্তের প্লেটলেট রিচ প্লাসমা (রক্তের এক ধরনের উপাদান) বের করে ফেললে রক্তের গ্রোথ হরমোনের উদ্দীপততা আরো বেড়ে যায়। এরপর তা রোগীর দেহে আবারো ঢোকানো হলে তা বার্ধ্যকের বিরুদ্ধে কাজ করে। মাইক্রো নিডেলস বা সুক্ষ্ম সুইয়ের মাধ্যমে এই ব্যথামুক্ত থেরাপিটি সম্পাদন করেন বৃটেনের চিকিৎসকরা। তিন ধাপে এই থেরাপিটি দেয়া হয়। আর প্রতিটি ধাপের জন্য রোগীকে খরচ করতে হয় ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থা এই পদ্ধতিতে বলিরেখা এবং বার্ধক্য ঠেকাতে সর্বসাকুল্যে খরচ হবে এক লক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
 
এই থেরাপি ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বাথ বলেন, “যেহেতু এখানে রোগীকে আমরা তার নিজের রক্তই তার দেহে প্রয়োগ করছি, তাই এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো অভিযোগ এখনো আসেনি। তিন মাসে আমরা আটজন রোগীর বার্ধক্য ঠেকাতে এই ‘ড্রাকুলা থেরাপি’ করেছি।”
 
তিনি আরো বলেন, “তবে, ‘ড্রাকুলা থেরাপি’র একটি দিক নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যেহেতু রক্ত খুবই স্পর্শকাতর একটি উপাদান, তাই এর প্রক্রিয়া করার সময় আমাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ল্যাবরেটরি হতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং চিকিৎসকদের হতে হবে অভিজ্ঞ।”
 
এই থেরাপি নেয়ার বয়সসীমা সম্পর্কে বাথ বলেন, “আপতত ‘ড্রাকুলা থেরাপি’র প্রতি নারীদেরই বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ত্রিশোর্ধ্ব নারীরাই বেশি এই থেরাপি নিচ্ছেন। তবে, এই থেরাপি ১৮ বছরের পর থেকে যেকোনো ব্যক্তিই নিতে পারবেন।”
 
বার্তা২৪ ডটনেট/আর

চিকিৎসাবিজ্ঞানের সেরা ১৩ আবিষ্কার

ব্লাড গ্রুপ না জানা থাকলে চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব
: কখনো কি ভেবেছেন, এখন পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার কোনগুলো? অথবা বিজ্ঞানীদের কোন কোন উদ্ভাবন আমাদেরকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সহায়তা করছে?
হঠাৎই একদিন মনে হলো বিজ্ঞানীরা আমাদের জন্য কতকিছুই না করছেন৷ তাদের একের পর এক আবিষ্কার আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলছে৷ সেটা বিজ্ঞানের সব শাখার ক্ষেত্রেই সত্য৷ তবে আজ আমরা জানবো চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কে৷ এ বিষয়ে তথ্যের জন্য সাহায্য নেই বিজ্ঞানীদের আরেক বিস্ময়কর আবিষ্কার ইন্টারনেটের৷

সেখানে অ্যামেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘ডিসকভারি কমিউনিকেশনস’র বিজ্ঞান বিষয়ক চ্যানেল ‘সায়েন্স’র করা একটি তালিকা খুঁজে পেলাম৷ তারা বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০০টি আবিষ্কারের একটা তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছে৷ এর মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের রয়েছে ১৩টি৷

প্রথমে এসেছে অ্যানাটমি বা শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটাছেঁড়ার বিষয়টি৷ অ্যানাটমির জনক আন্দ্রেয়াস ভেসিলাস ১৫৩৮ সালে প্রথমবারের মতো মরদেহ কেটে ভিতরে কোন্ জিনিস কী অবস্থায় আছে সেটা জানার চেষ্টা করেছিলেন৷ কেননা তার মনে হয়েছিল সঠিকভাবে সার্জারি করার জন্য বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন৷

এরপর এসেছে রক্ত সঞ্চালনের বিষয়৷ অ্যানাটমি আবিষ্কারের প্রায় ৯০ বছর পর উইলিয়াম হার্ভে এ ব্যাপারটি সবার সামনে নিয়ে আসেন৷ তিনি বলেন, মানুষের হৃদপিণ্ড সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে থাকে৷

রক্তের যে বিভিন্ন গ্রুপ হতে পারে সেটা প্রথম জানান অস্ট্রিয়ার দুই জীববিজ্ঞানী, ১৯০২ সালে৷ তাদের কারণে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের বিষয়টি এখন অনেক নিরাপদ৷

ব্লাড গ্রুপ সম্পর্কে জানার আগেই অবশ্য বিজ্ঞানীরা অ্যানেস্থেশিয়া বিষয়টি জেনে গিয়েছিলেন৷ ১৮৪২ থেকে ১৮৪৬ এই চার বছরের মধ্যেই অনেক বিজ্ঞানী বের করেন যে, কিছু কিছু কেমিক্যালের কারণে রোগীকে ব্যথা দেয়া ছাড়াই সার্জারি করা সম্ভব৷

জার্মান বিজ্ঞানী ভিল্মহেল্ম রোয়ন্টগেন ১৮৯৫ সালে এক্স-রে আবিষ্কার করেন৷ এর ফলে শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞান নয়, লাভবান হয়েছে পদার্থবিদ্যাও৷ ফলে পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম নোবেল পুরস্কারটি পেয়েছেন রোয়্যান্টগেন৷

লুই পাস্তুরের কথা আমরা অনেকেই জানি৷ তাকে বলা হয় ব্যাকটেরিওলজির জনক৷ কারণ ১৮শ’ শতকের দিকে যখন কলেরা, অ্যানথ্রাক্স এসব রোগের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন পাস্তুরই আবিষ্কার করেন যে, কিছু কিছু মাইক্রোবের কারণে এসব রোগ হয়ে থাকে৷ এসব মাইক্রোব বা জীবাণুর নাম তিনি দেন ব্যাকটেরিয়া৷

ব্যাকটেরিয়া যেমন রোগের কারণ তেমনি পুষ্টিকর খাবারের অভাবেও রোগ হতে পারে৷ ১৯ শতকের প্রথম দিকে এই তত্ত্ব নিয়ে আসেন ফ্রেডেরিক হপকিন্স৷ পরবর্তীতে খাবারের এই সব উপাদানের নাম দেয়া হয় ভিটামিন৷

তালিকায় এরপর এসেছে পেনিসিলিনের নাম৷ আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং এটি আবিষ্কার করেন৷ পরে হাওয়ার্ড ফ্লোরে এবং বরিস চেইন পেনিসিলিন নিয়ে আরও গবেষণা করেন৷ এর এক পর্যায়ে তারা দেখতে পান ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ইঁদুরকে পেনিসিলিন দিয়ে সারিয়ে তোলা যাচ্ছে৷

১৯৩০ এর দশকে গেরহার্ড ডোমাক’র আবিষ্কার ‘সালফা ড্রাগস’ও ব্যাকটিরায়জনিত রোগ নিরাময়ে কাজ করে৷

ইংরেজ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার ১৭৯৬ সালে ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেন৷ ১৭৮৮ সালে ব্রিটেনের বিভিন্ন গ্রামে মহামারি আকারে গুটিবসন্ত ছড়িয়ে পড়লে সেটা থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন জেনার৷ এর ফলশ্রুতিতেই পরবর্তীতে তিনি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সমর্থ হন৷

ডায়াবেটিস রোগীদের জীবন অনেকটা সহজ করে দিয়েছে ইনসুলিন৷ রক্তে সুগার বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে এই হরমোন৷ ১৯২০ এর দশকে ইনসুলিনের আগমনের আগে ডায়াবেটিস রোগ মানেই মনে করা হতো ধীরে ধীরে রোগীর নিশ্চিত মৃত্যু৷

হ্যারল্ড ভার্মুস এবং মাইকেল বিশপ ১৯৭৫ সালে অঙ্কোজিনের সন্ধান দেন৷ এটা এমন এক জিন, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে৷

সবশেষে এসেছে এইডস রোগের কারণ এইচআইভি ভাইরাসের আবিষ্কার৷ একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই বিজ্ঞানী  রবার্ট গেলো এবং লুক মন্টাজনিয়ের ১৯৮০’র দশকে এই ভাইরাসের সন্ধান দিয়েছিলেন৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।

বার্তা২৪ ডটনেট/এসএফ

আয়নার কেরামতিতে কমবে বাতের ব্যথা

বাতের ব্যথা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া খুব সহজেই সম্ভব না। কিন্তু এই ব্যথা কামানোর খুব সহজ এবং সস্তা একটি পথ সম্প্রতি খুঁজে বের করেছেন একদল গবেষক। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক আয়না দিয়ে বাতের ব্যথা কমানোর খুব সহজ একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন।
 
ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘মিরর ট্রিক’। তারা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে বাতের ব্যথা পুরোপুরি সারানো না গেলেও কিছু সময়ের জন্য মস্তিষ্ককে ফাঁকি দিয়ে ব্যথামুক্ত থাকা যায়।
 
এই গবেষণার প্রধান গবেষক লরা কেস বলেন, “আমাদের গবেষণা থেকে যে পদ্ধতিটি বেরিয়ে আসলো তা খুবই সহজ এবং সস্তা। এর মাধ্যমে, আয়না দিয়ে বাতের ব্যথাসহ মাংসপেশীর অসাড়তা এবং আঘাতজনিত ব্যথাও দূর করা সম্ভব।”
 
এই ‘মিরর ট্রিক’র ব্যাপারে লরা জানান, এই পদ্ধতিতে রোগীর যদি বাম হাতে বাতের ব্যথা থাকে তাহলে একটি টেবিলে ওই হাতটি রাখা হয় এবং একটি বড় আয়না দিয়ে সেই হাতটি ঢেকে দেয়া হয়। এরপর রোগীর ডান হাত টেবিলের ওপর তোলা হয়। হাতটি এমনভাবে রাখতে হবে যেন ডান হাতের প্রতিবিম্বটি গিয়ে ঠিক বাম হাতের জায়গায় পড়ে। প্রতিবিম্বটি দেখলে যেন দেখলে মনে হয় এটা রোগীর বাম হাতই। এরপর রোগীর সামনে দাঁড়াবেন একজন চিকিৎসক যিনি রোগীকে বামদিকের আয়নার দিকে তাকিয়ে ডান হাত নাড়াতে বলবেন। এভাবেই কিছুক্ষণ রোগী তার ডান হাত বিভিন্ন ভাবে নাড়াবেন এবং আয়নার দিকে তাকিয়ে তা দেখবেন। এতে কিছুক্ষণ পর রোগী তার বাম হাতের ব্যথা কম অনুভব করবে।
 
লরা বলেন, “শুনতে অদ্ভূত মনে হলেও, আমরা এই ‘মিরর ট্রিক’ খেবে ইতিবাচক ফল পেয়েছি। আমাদের দেয়া ‘মিরর ট্রিক’-এ গড়ে প্রতি ১০ জন রোগীর একজন ইতিবাচক ফলাফল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ নির্ভর করে রোগীর মানসিক অবস্থার ওপর এবং তার সদিচ্ছার ওপর।”
 
বার্তা২৪ ডটনেট/আর

প্লেট বলে দেবে খাবার পরিমাণ

 বৃটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (এনএইচএস) এমন একটি খাবার প্লেট আবিষ্কার করেছে, যা বলে দেবে কে, কতটুকু খাবে, কিভাবে খাবে?
 
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই প্লেট স্থূল ব্যক্তিদের জন্য অনেক উপকারী একটি যন্ত্র। কারণ, কোনো স্থূল ব্যক্তি যখন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাবার প্লেটে তুলবে তখনই সতর্কবাণী বেজে উঠবে, বেশি দ্রুত খাওয়া শুরু করলে কথা বলে উঠবে প্লেটটি।
 
অদ্ভূত এই যন্ত্রটির নাম হলো ‘ম্যান্ডোমিটার’। বৃটেনের বাজারে এটা ১৫০০ পাউন্ডের বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে।
 
‘ম্যানন্ডেমিটার’ তৈরি হয়েছে সুইডেনে। এরপর এটা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। এই গবেষণার প্রধান প্রফেসর জুলিয়ান হ্যামিলটন শিল্ড বলেন, “আমরা প্রায় ৬০০ বৃটিশ পরিবারকে ম্যান্ডোমিটার দিই। এই ৬০০ পরিবারে অন্তত দুই সদস্য স্থূলতার সমস্যায় ভুগছে। তাদের ম্যান্ডোমিটার দেয়ার পর এক বছর পর্যবেক্ষণ করি। এবং দেখতে পাই ছয় মাস ম্যান্ডেমিটার তাদের খাবার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এরপরের ছয় মাস আর তাদের ম্যান্ডোমিটারের প্রয়োজন হয়নি। এমনিতেই তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসছে।”
 
এই যন্ত্রটির আছে তিনটি অংশ। একটি প্লেট, প্লেটের নিচে একটি ছোট্ট মিটার এবং একটি স্ক্রিন। ওই স্ক্রিনে আগে থেকেই দিয়ে দেয়া হয় স্থূল ব্যক্তির বয়স, ওজন এবং উচ্চতা। এরপর বয়স, ওজন এবং উচ্চতার তুলনায় প্লেটে বেশি খাবার তুলে নিলে সংকেত দেয় মনিটর। এরপর যদি খাবার বেশি দ্রুত বা প্লেট থেকে প্রয়োজনের তুলনা বেশি তুলে ফেলে তাহলে কথা বলে উঠে প্লেটটি। সতর্ক করে বলে, “প্লিজ ইট মোর স্লোলি”। আর খাবার শেষে প্লেটটি প্রশ্নও করে, “আর উই ফিলিং ফুল ইয়েট?”
 
ম্যান্ডোমিটার নিয়ে গবেষণা শেষে এর ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির বায়োমেডিকেল রিসার্চ ইউনিট থেকে বলা হয়েছে, ম্যান্ডোমিটার থেকে স্থূলতার সমস্যা নিরসনে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে। তাই এখন এটা বাজারে ছাড়া হয়েছে এবং এর জন্য যথেষ্ট সাড়াও পাওয়া গেছে।
 
বার্তা২৪ ডটনেট/আর

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Facebook Themes