Total Pageviews

Friday, October 14, 2011

যত বেশি ঘাম, তত বেশি সুস্থতা

ঘাম সবার জন্যই একটি বিরক্তিকর বিষয়। আবার অনেক সময় ঘামের মাধ্যমে কোঝা যায় আপনি কতটা পরিশ্রম করেছেন, কতটা ক্লান্ত। এর বেশি কখনোই হয়ত ঘাম নিয়ে এতটা ভাবা হয়নি। কিন্তু ঘাম নিয়েও আছে নানান অবাক করার তথ্য। ঘামের ধরন, উপকারিতা, উৎস সহ আরো অনেক মজার তথ্য জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এক দল গবেষক।
ভিন্নতা আছে নারী-পুরুষের ঘামানোর মধ্যে
নারী-পুরুষ পুরোপুরি ভিন্ন। তাদের দেহ গড়ন ভিন্ন, তাদের মানসিকতা ভিন্ন, তাদের খাদ্যাভাস থেকে শুরু করে ঘামানোর মাত্রাটা পর্যন্ত ভিন্ন।
গবেষকরা দেখেছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং সমবয়সী একজন নারী একই পরিমাণ কাজ, একই সময় ধরে করছে এবং পরিশ্রম একই পরিমাণ করেছে। কিন্তু তাদের তাদের ঘামানোর মাত্র ছিল ভিন্ন। সেই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ তার সমবয়সী নারীর তুলনায় চারগুণ বেশি ঘাম ঝড়িয়েছে। এই ভিন্নতার পেছনে হরমোন দায়ী বলে মনে করছেন গবেষকরা। তবে তারা এখনো এর নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাদের এই গবেষণার প্রতিবেদনটি কিছুদিন আগে ‘এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিওলজি’ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়।
বেশি ঘাম, মানে সুস্থতা
অনেকেরই ধারণা, বেশি ঘামানো মানে অসুস্থতার লক্ষণ লক্ষণ। কিন্তু এই ধারণাটিকে ভুল বলে উড়িয়ে দিলেন গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন, ঘাম বেশি হওয়া মানে হলো আপনি পুরোপুরি ফিট আছেন। যত বেশি ঘাম, তত বেশি সুস্থতা।
এর কারণ হিসেবে গবেষকার বলেছেন, বেশি ঘামানোর মানে হলো আপনি বেশি কাজ করছেন। এর মানে হলো আপনার দেহ যারা কম ঘামায় তাদের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয়। আর তাই দেহের ভেতরে জমে থাকা পানি ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে শরীরকে ঠাণ্ডা করে। এর মাধ্যমে পরিশ্রমের ফলে শরীরের তাপমাত্র বেরে গেলে, ঘাম তা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের ফিট রাখে।
পূর্বসূরিদের প্রভাবও আছে ঘামে
আপনি যদি স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি ঘামান, তাহলে এতে আপনার কোনো হাত নেই। এর জন্য দায়ী আপনার বংশ।
কারণ, গবেষকদের মতে জন্মগতভাবেই মেজর হিস্টোকম্পাটিবেলিটি নামের একটি অনু ঘামানোর মাত্রা এবং ঘাম সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর এই অনুটি আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাই আমাদের মা-বাবার কাছ থেকে।
অতিরিক্ত ঘাম
আমরা সাধারণত ঘামাই যখন আবহাওয়া অনেক উত্তপ্ত থাকে, অনেক পরিশ্রমের পর, ভয় পেলে অথবা ভারি কোনো কাপড় পরলে। কিন্তু অনেকেই আছে ওপরের কারণগুলো ছাড়াও অহেতুকই ঘামায়। দেখা যায় ঠাণ্ডা কোনো কক্ষে বসে থাকার পর ঘামছে কারো হাত, পা, মুখ বা বগল।
যদি এমনটা আপনার সঙ্গেও হয়, তাহলে বুঝতে হবে এটা একটা রোগ। চিকিৎসকদের ভাষায় একে বলে হাইপারহাইড্রোসিস। এই রোগে অধিকাংশ সময়েই মানুষ কোনো কারণ ছাড়াই ঘামায়। বিশেষ করে হাতের তালু, পায়ের তলা, বগেএবং মুখমন্ডলে অতিরিক্ত এই ঘামের উৎপত্তি হয়। যা অনেকের জন্যই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে এবং ভবিষ্যতে বড় কোনো রোগ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। কারণ সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হলে এক সময় এই ঘামানোর রোগ পারকিনসনস এবং ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রূপও ধারণ করতে পারে।
ঘাম দুই ধরনের
ঘামেরও আছে ধরন। আমাদের দেহে দুই ধরনের ঘামের উৎপত্তি হয়ে থাকে। একটি হলো একরিন সোয়েট গ্ল্যান্ড, অপরটি অ্যাপোক্রিন সোয়েট গ্ল্যান্ড।
একদিন সোয়েট সোয়েট গ্ল্যান্ড হলো সাধারণ ঘাম, যা শরীর থেকে জমে থাকা পানি গুলো বের করে দেয়। একটানা কাজ বা ব্যায়াম করলে এই ঘাম শরীর থেকে নিঃসরিত হয়।
অন্যদিকে অ্যাপোক্রিন সোয়েট গ্ল্যান্ড হলো, লোমকুপ থেকে যে ঘম নিঃসরিত হয় তা। অর্থাৎ অতিরিক্ত গরমে অথবা দুশ্চিন্তা আমাদের মাথার ত্বক বা বগল ঘামলে যে ঘাম বের হয় তা হলো অ্যাপোক্রিন সোয়াট গ্ল্যান্ড।
বার্তা২৪ ডটনেট

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Facebook Themes