Total Pageviews

Monday, June 20, 2011

বুকে ব্যথার অন্তর্নিহিত কারণ


ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন
বুকে ব্যথা এক ধরনের জটিল সমস্যা। এ সমস্যা এত জটিল যার ফলে কোনো ব্যক্তিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও যাওয়া লাগতে পারে। বিভিন্ন কারণে বুকে ব্যথা হয়ে থাকে। প্রথমে দেখতে হবে বুকে ব্যথা আঘাতজনিত কারণে না আঘাতবিহীন কারণে। যদি আঘাতবিহীন কারণে বুকে ব্যথা হয় তাহলে প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে হৃদরোগজনিত কারণে না অন্য কোনো কারণে বুকে ব্যথা হয়েছে। এ কারণ নির্ধারণের জন্য রোগীর কাছ থেকে রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং এরপর শারীরিক ও ল্যাব পরীক্ষা করে সঠিক রোগ নির্ণয় করলে বেশিরভাগ বুকের ব্যথা ভালো করা সম্ভব।
বুক ব্যথার কারণ : হৃদরোগজনিত, িফুসফুসজনিত কারণ, িমাংসপেশিজনিত , িখাদ্যনালীজনিত কারণ, িমানসিক ও অন্যান্য কারণ।
বুকে ব্যথার প্রকৃতি : চাপ চাপ ব্যথা, মনে হয় বুকের মাঝখানে পাথর বসিয়ে রেখেছে এমন, দম বন্ধ হয়ে আসে এমন বা অনুভূতিহীন যেমন হৃদরোগজনিত কারণ। তীব্র ব্যথা, ছুরি দিয়ে আঘাত করলে যেমন মনে হয়, পোড়ানো ব্যথা, শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ব্যথা_ ফুসফুসজনিত কারণ যেমন নিমোনিয়া, পালমোনারি অ্যামবলিজম, হৃদযন্ত্রের প্রদাহ।
হঠাৎ তীব্র পীড়াদায়ক ব্যথা বুকের সামনে থেকে পেছনে চলে যায় অড়ৎঃরপ উবংবপঃরড়হ (ধমনি ছেঁড়াজনিত কারণ) বুকে ব্যথা পরিশ্রম করলে, দুশ্চিন্তা করলে, ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসলে, দুঃস্বপ্ন দেখলে বাড়ে। কিন্তু বিশ্রাম নিলে জিহ্বার নিচে নাইট্রেটজাতীয় ওষুধ দিলে কমে তাহলে হৃদরোগ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। খাবার পর, শোবার সময়, গরম খাবার, মদ পান করলে এবং খালি পেটে যদি ব্যথা বাড়ে, অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে কমে যায়, তাহলে খাদ্যনালীজনিত কারণ।
বুকে ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হলে হৃদরোগ, পালমোনারি অ্যামবলিজম নিমোনিয়া নিউমোথোরাক্স হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। পরিশ্রম করার কিছুক্ষণ পর থেকে ব্যথা শুরু হয়, বিশ্রাম নিলেও ব্যথা থাকে, ব্যথা নিরাময় জাতীয় ওষুধ (যেমন উরপষড়ভবহ) জাতীয় ওষুধ থেকে ব্যথা কমে তাহলে মাংসপেশিজনিত কারণ বলে সন্দেহ করা হয়।
জরুরি বিভাগে বুকের ব্যথাজনিত কারণে যেসব রোগী আসে তার শতকরা ১০ ভাগের বেশি আসে মানসিক বা দুশ্চিন্তাজনিত কারণে।
অনেক সময় পেটে ব্যথার সঙ্গে বুকে ব্যথা থাকতে পারে। যেমন পিত্তথলিতে পাথর অথবা চধহপৎবধঃরঃরং কারণে হয়। যে কারণেই বুকে ব্যথা হোক না কেন রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যেমন বুকের এক্সরে, ইসিজি জাতীয় পরীক্ষা করে দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা করালে বেশির ভাগ রোগী ভালো হয়ে যায় এবং অনেক সময় দ্রুত হৃদরোগ নির্ণয় করা যায় এবং সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো রোগের কারণ না পাওয়া যায় সেই ক্ষেত্রে রোগীকে সঠিক উপদেশ দিয়েও বুকের ব্যথা ভালো করা সম্ভব।
লেখক : পরিচালক
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
মহাখালী, ঢাকা। ফোন : ০১৭১১-১৭১৬৩৪

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Facebook Themes