‘ড্রাকুলা’ বলতে আমরা এক কথায় বুঝি পিশাচ। যারা মানুষের রক্ত শুষে নেয়। কিন্তু এখন চিকিৎসকরা এই ‘ড্রাকুলা’কে নিয়ে এসেছেন তাদের ল্যাবরেটরিতে। বার্ধক্য ঠেকাতে অবিষ্কার করা নতুন পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে ‘ড্রাকুলা থেরাপি’।
এই থেরাপির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এই থেরাপিটি ‘ড্রাকুলা’র রক্ত শুষে নেয়ার পদ্ধতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আবিষ্কার করা হয়েছে বলে একে বলা হয় ‘ড্রাকুলা থেরাপি’।
এই থেরাপিতে বলিরেখা এবং বার্ধক্য ঠেকাতে নিজের দেহের রক্ত বের করে, ল্যাবরেটরিতে প্রক্রিয়াজাত করে তা আবার নিজ দেহেই ঢোকানো হয়।
এই থেরাপির গবেষক বৃটেনের বিএলকে স্পেশালিটি হসপিটালের প্লাসিট এবং কসমেটিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এএস বাথ একটি সংবাদ মাধ্যমে এই ‘ড্রাকুলা থেরাপি’ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। বাথ বলেন, “এই নতুন পদ্ধতিটি খুবই নির্ভরযোগ্য। আমরা বার্ধক্য ঠেকাতে এখানে রোগীর দেহের রক্ত ব্যবহার করি। রোগীর দেহ থেকে আমরা ১৫-২০ এমএল রক্ত নিই। এবং রক্তের গ্রোথ হরমোনকে প্রকিয়া করি। এরপর তা আবারো রোগীর দেহে প্রয়োগ করি। ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা রক্ত রোগীর মুখমণ্ডলে ঢোকানো হয়।”
বাথ আরো জানান, রক্তের প্লেটলেট রিচ প্লাসমা (রক্তের এক ধরনের উপাদান) বের করে ফেললে রক্তের গ্রোথ হরমোনের উদ্দীপততা আরো বেড়ে যায়। এরপর তা রোগীর দেহে আবারো ঢোকানো হলে তা বার্ধ্যকের বিরুদ্ধে কাজ করে। মাইক্রো নিডেলস বা সুক্ষ্ম সুইয়ের মাধ্যমে এই ব্যথামুক্ত থেরাপিটি সম্পাদন করেন বৃটেনের চিকিৎসকরা। তিন ধাপে এই থেরাপিটি দেয়া হয়। আর প্রতিটি ধাপের জন্য রোগীকে খরচ করতে হয় ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থা এই পদ্ধতিতে বলিরেখা এবং বার্ধক্য ঠেকাতে সর্বসাকুল্যে খরচ হবে এক লক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
এই থেরাপি ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বাথ বলেন, “যেহেতু এখানে রোগীকে আমরা তার নিজের রক্তই তার দেহে প্রয়োগ করছি, তাই এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো অভিযোগ এখনো আসেনি। তিন মাসে আমরা আটজন রোগীর বার্ধক্য ঠেকাতে এই ‘ড্রাকুলা থেরাপি’ করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “তবে, ‘ড্রাকুলা থেরাপি’র একটি দিক নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যেহেতু রক্ত খুবই স্পর্শকাতর একটি উপাদান, তাই এর প্রক্রিয়া করার সময় আমাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ল্যাবরেটরি হতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং চিকিৎসকদের হতে হবে অভিজ্ঞ।”
এই থেরাপি নেয়ার বয়সসীমা সম্পর্কে বাথ বলেন, “আপতত ‘ড্রাকুলা থেরাপি’র প্রতি নারীদেরই বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ত্রিশোর্ধ্ব নারীরাই বেশি এই থেরাপি নিচ্ছেন। তবে, এই থেরাপি ১৮ বছরের পর থেকে যেকোনো ব্যক্তিই নিতে পারবেন।”
বার্তা২৪ ডটনেট/আর
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment